‘হামলা আমার ক্যাম্পাসে, বিচার চাইব কোনখানে?’
সহপাঠীর হাত ধরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনার দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওই দাবিতে ৭২ ঘণ্টা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ওই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কর ও ছাত্রত্ব বাতিল, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ফুটেজ থেকে বাকি জড়িতদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সব সাধারণ শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাসে নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
নিজেদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করে শিক্ষার্থীরা। এগুলোতে লেখা ছিল, ‘আমার ভাইবোনের ওপর হামলা কেন?’, ‘আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘হামলা আমার ক্যাম্পাসে, বিচার চাইব কোনখানে’ ইত্যাদি স্লোগান।
এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করেন, ‘কোন কর্তৃত্ববলে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী আরেকজন শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র দেখতে চায়? এই সাহস তাদের কে দিল?’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ভালো লক্ষণ নয়। আমরা ভিসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবেন। আমরা তার প্রমাণ দেখতে চাই।’
মানববন্ধনে হামলার শিকার দুই শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ ও রোকেয়া গাজী লিনাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমাদের ওপর কেন হামলা করা হলো শুধু এটুকুর জবাব চাই।’
মারধর করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন সিফাত উল্লাহ সিফাত, আলে ইমরান পলাশ ও মাহমুদুর রহমান। তারা তিনজনই সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পলাশ হল শাখা ছাত্রলীগের কার্যনিবাহী সদস্য। বাকি দুজন ছাত্রলীগকর্মী।
সিফাত উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, আলে ইমরান পলাশ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও মাহমুদুর রহমান আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের অধীনে ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাংগুয়েজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান, অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হানসহ বিভাগের অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দুই সহপাঠী আসাদুজ্জামান ও লীনা প্রশাসনিক ভবনের সামনে হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। পরিচয়পত্র দেখালেও তাদের মারধর করেন ওই শিক্ষার্থীরা।