নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়াছাত্রসহ আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের মুক্তির দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা।

শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় নেতারা চট্টগ্রাম জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন এবং রাজনৈতিক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান আশাফের মুক্তির দাবিও জানান।

কর্মসূচিতে রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশনের রাজনৈতিক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, ‘শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে নয়, মৌলিক অধিকার হিসেবে নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় তৎপরতার অভাবে যুগে যুগে নিপীড়িত হওয়া শিক্ষার্থীদের একত্রিত হতে হবে। এদেশে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য চলছে। সমাজের উচ্চ শ্রেণিরা শিক্ষার ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে।’

মোহাব্বত হোসেন আরো বলেন, ‘যখন শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তাদের ওপর পুলিশ ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। অসংখ্য শিক্ষার্থী নির্মম নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে। এমনকি আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ধরনের হামলা-মামলা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবকে স্পষ্ট করে।’ এ সময় তিনি দেশের গণতান্ত্রিক শিক্ষা, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানান।

কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক জিনাত আরা সমো, রাবি শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মোড়লসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সঙ্গে কথা বলেছিলেন শহীদুল আলম। সংবাদমাধ্যমটির বিশ্লেষণধর্মী সেই অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে হামলাসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন তিনি। পরে শহীদুল আলমকে তাঁর রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসা থেকে গত ৫ আগস্ট রাতে আটক করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।

এদিকে, ৬ আগস্ট নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন এবং রাজনৈতিক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান আশাফকে ৫৭ (২) ধারায় গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। এ ছাড়া সারা বাংলাদেশে আন্দোলন চলাকালীন ও আন্দোলন শেষে বহু ছাত্রছাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।