রাবির ভর্তি পরীক্ষা আজ, পিছু ছাড়ছে না প্রশ্ন ফাঁসের শঙ্কা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আজ সোমবার শুরু হবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে রাবি ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পরীক্ষায় জালিয়াতি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থান নিলেও প্রক্সি ও প্রশ্ন ফাঁসের শঙ্কা যেন পিছু ছাড়ছে না ভর্তি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের। ভর্তিচ্ছুদের এখন একটাই দাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের মতো রাবিতেও যেন প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা না ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টার দিকে ইউনিট ‘সি’ গ্রুপ ১-এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। বিকেল সাড়ে ৪টায় ইউনিট ‘বি’ গ্রুপ ১-এর মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।
এরপর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ইউনিট ‘বি’ গ্রুপ ২-এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ইউনিট ‘এ’ গ্রুপ ২-এর মধ্য দিয়ে এবারের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।
এ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৩২ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া এ বছর পাঁচটি ইউনিটের আওতায় ৫৯টি বিভাগে মোট চার হাজার ৭০০টি আসনের বিপরীতে এক লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০টি প্রবেশপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
সিলেট থেকে আসা ইমরান হোসেন নামের এক ভর্তি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য অনেক প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু ভয় হচ্ছে ভর্তি জালিয়াতি নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যদি এখানেও এ রকম ঘটনা ঘটে তাহলে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে তাদের কষ্ট বৃথা যাবে।’
চাঁদপুর থেকে আসা মমিন নামের আরেক ভর্তি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি জালিয়াতি একটি রীতি হয়ে গেছে। প্রতি বছর জালিয়াতির মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। এটি বন্ধ না হলে প্রকৃত মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।’
আবদুল হাকিম নামে ভর্তি পরীক্ষার্থীর এক বাবা বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। ছেলেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু যেভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, মেধা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য আমি শঙ্কায় আছি, আমার ছেলে কি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে?’
কক্সবাজার থেকে আসা রাকিব নামের এক ভর্তি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে ৬০৪তম হয়েছি। সেখানে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে অপেক্ষমান তালিকায় থেকেও ভর্তি হতে পারব কি না জানি না। অনেক আশা নিয়ে রাবিতে এসেছি। যদি এখানেও একই ঘটনা ঘটে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন হয়তো পূরণ হবে না।’
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। জালিয়াতি ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। কেউ যদি অবৈধ পন্থা অবলম্বন করতে চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন।’