ঢাবির আটক সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা মুক্ত, মালির বিরুদ্ধে মামলা
মাদক সেবন ও ব্যবসার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে আটক তিনজনের মধ্যে ছাত্রলীগের দুই সাবেক নেতা রাজু ও রমজানকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার রাতে এই ছাত্রলীগ নেতাদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান।
ওসি আবুল হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর টিমের সদস্যরা গিয়ে ওই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের থানা থেকে নিয়ে যান। তবে তাদের সঙ্গে আটক চাকরিচ্যুত কর্মচারীর (মালি) বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওসি আবুল হাসান বলেন, ‘আটককৃতদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বা কেউ অভিযোগ দেয়নি। সে কারণে প্রক্টর টিমের সদস্যরা এসে তাদের নিয়ে গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ না পেলে কাল (বৃহস্পতিবার) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
এ ব্যাপারে জসীম উদদীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘তাদের থানায় দিয়েছি। বাকিটা তো আমি জানি না। নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করবে। আর থানায় তো তাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করবে। আর এদের একজনের নামে তো আগেই মামলা ছিল। সাক্ষী-প্রমাণ প্রসিউিউর এগুলো সব পুলিশের ব্যাপার। আমরা তাদের এ কারণে পুলিশে তুলে দিয়েছি। কারণ তাঁরা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পুলিশে তুলে দেওয়ার পর থেকে এ বিষয়ে আর কিছু জানি না।’
তাঁদের পুলিশে দেওয়ার সময় ড. রহমত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা কক্ষটিতে আসা-যাওয়া করে বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। অথচ এদের কেউ হলের আবাসিক ছাত্র নয়। কক্ষটি ব্যবহার করে ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকের চালান হয় বলে আমরা জানতে পারি। পরবর্তী সময়ে হলের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের তথ্যের ভিত্তিতে কক্ষটিতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে এবং কক্ষটি সিলগালা করা হয়েছে।’
এদিকে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেন,‘প্রক্টর টিমকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা জানিয়েছে যে, তিনজনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে দুজনের (ছাত্রলীগ) বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর একই কারণে আগের অভিযুক্ত একজন (বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী) চাকরি থেকে বরখাস্তের পর্যায়ে আছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে।’
একই অভিযোগে আটক একজনের নামে মামলা হবে, আর বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হলো কেন এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, ‘মামলা একজনের নামে হবে কারণ তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকেই এ ধরনের অভিযোগ ছিল। বাকিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রমাণ এবং সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি, যেটার ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক মামলা করা যায়।’
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হলের ৩২১ নং কক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক শাহরিয়ার মাহমুদ রাজু, কবি জসীম উদদীন হল ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রমজান হোসাইন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পি জে হার্টগ হলের (আন্তর্জাতিক হল) চাকরিচ্যুত মালি সুমন লাল দেকে আটক করা হয়। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এদের মধ্যে সুমনকে এর আগেও মাদকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল থেকে আটক হন। এ কারণে তিনি চাকরিচ্যুতও হয়েছিলেন। আটক দুই ছাত্রলীগ নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।