পাবিপ্রবিতে জেলহত্যা দিবসে দায়সারা কর্মসূচি, ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) প্রথা ভেঙে ক্যাম্পাসের বাইরে দায়সারাভাবে জেলহত্যা দিবস পালন করার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসন ভবনের সামনে সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জামায়াত-বিএনপি আখ্যায়িত করে বিচারের দাবি জানান।
পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আসিফ কবিরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি মাহমুদ কামাল তুহিন, সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর উল্লাহ, শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সভাপতি লিংকন হোসেন প্রমুখ। সমাবেশের আগে বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু জানান, প্রতি বছর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোক র্যালি, পাবনার কৃতি সন্তান এম মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এবার তা হয়নি। দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত উপাচার্য অধ্যাপক রোস্তম আলী তাঁর অনুগত প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে রাজশাহীতে দায়সারাভাবে দিবসটি পালন করেছে। এতে শিক্ষার্থীরা দিবসটির তাৎপর্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক ক্ষোভের সঙ্গে জানান, বঙ্গবন্ধু বা জাতীয় চার নেতাকে এভাবে প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে বেধে রাখা ঠিক হয়নি। এভাবে প্রশাসনের কয়েকজন গিয়ে রাজশাহীতে শ্রদ্ধা জানানো ঠিক হয়নি। জাতীয় চার নেতার একজনের বাড়ি পাবনায় হওয়া সত্ত্বেও এখানে কোনো কর্মসূচি না থাকায় আমরা মর্মাহত। তাদের অবজ্ঞা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক শিক্ষক বলেন, পাবনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে জেলহত্যা দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এবার সেই প্রথা ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা অপচয় করে গুটি কয়েকজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহীতে দিবসটি পালন করা হয়। এই কর্মসূচিকে উপাচার্যের প্রমোদ ভ্রমণ বলে আখ্যায়িত করেছেন ওই শিক্ষক।
এ ব্যাপারে উপাচার্য রোস্তম আলী খান ফরাজী বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসে আলোচনা সভা হয়েছে। জাতীয় চার নেতার মধ্যে রাজশাহীতে শহীদ কামরুজ্জামানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থাকার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘আমার শরীর খারাপ থাকায় রাজশাহীর কর্মসূচি শেষে রাজশাহীর বাসভবনে চলে আসি।’