রাবিতে বাণিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনী, ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাণিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। আগামী ১ থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ সিনেমার প্রদর্শনী হবে। সিনেমা প্রদর্শনীর জন্য এরই মধ্যে মিলনায়তনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা প্রদর্শনীকে নেতিবাচকভাবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) নীতিমালা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে মিলনায়তনটি অর্থের বিনিময়ে ভাড়া দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, নিয়ম থাকলেও বাণিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া একদম অযৌক্তিক। এ ধরনের প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলেও মনে করছেন জ্যেষ্ঠ কয়েকজন অধ্যাপক।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মঈদ উদ্দিন বলেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ও সাংস্কৃতিক মননশীলতা বিকাশে বাধা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতি চর্চার যে ধারা রয়েছে এটি তার পরিপন্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, আমাদের মিলনায়তনটি কোনো সিনেমা হল নয় যে এখানে কোনো সিনেমার প্রদর্শনী দিতে হবে। আর এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে।
রাবি চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ বকুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে ধরনের সংস্কৃতি চর্চা করি তার গতিপথকে এই প্রদর্শনী ব্যহত করে। আর এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার পরিপন্থী।’
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামূলক যেকোনো প্রদর্শনীর আয়োজন করতে পারি। কিন্তু দহন সিনেমাটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক। এই প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিকে বাণিজ্যিকীকরণের দিকে ঠেলে দেবে।’
এ বিষয়ে টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, ‘মিলনায়তনটি ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটেরও অনুমোদন রয়েছে। সেই নীতিমালার অনুযায়ীই মিলনায়তনটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।