প্রক্টরের পাহারায় ঢাবির বৈঠকে এলো ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শুরু হয়েছে। এ আলোচনা সভায় প্রক্টর টিমের পাহারায় অংশ নিয়েছে ছাত্রদল।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে এই সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রদলের নেতারা যথাসময়ে উপস্থিত না হওয়ায় তা আধা ঘণ্টা পর শুরু হয়।
উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী সভায় উপস্থিত হন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, সহকারী প্রক্টর মো. বদরুজ্জামান ভুঁইয়া, সহকারী প্রক্টর সীমা ইসলামসহ প্রক্টর টিমের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য ছাত্রদলের নেতাদের পাহারা দিয়ে সভার ভেতরে নিয়ে আসেন।
এর কয়েক মাস আগে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম দফার আলোচনা সভায় পাহারা দিয়ে ক্যাম্পাসে নেওয়া হয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকীকে।
বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত ছাত্রদলের নেতারা। তাঁরা বলেন, ‘এভাবে নিয়ে আসা মানে বোঝাই যায় ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমরা নিরাপদ নই। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাওয়াতে আমরা সভায় আসতে শঙ্কাবোধ করছি। এ জন্য প্রক্টর আমাদের সহযোগিতা করেছেন। ডাকসু নিয়ে প্রচারণা চালাতে গেলে তখন কে আমাদের সহযোগিতা করবে? প্রশাসনের উচিত দ্রুত ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি করা।’
এর আগেও ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবি জানায় ছাত্রদল। গতকাল বুধবার ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার সহাবস্থান নিশ্চিতের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম দাবি হচ্ছে, সব ছাত্রসংগঠনের জন্য সহাবস্থান নিশ্চিত করা। সবাই যেন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ারভাবে নির্বাচনের কাজ করতে পারে, সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে। এর আগে পরিবেশ সংসদের একটি সভা হয়েছে। সেখানে আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়েছিলেন। কিন্তু যেভাবে পাহারা দিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে, এর থেকেই প্রমাণ হয় যে সহাবস্থান নেই। এভাবে এলে নির্বাচনের পরিবেশ হয় না। আমরা চাই, আগে সহাবস্থান, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হোক।’
ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি আরো বলেন, ‘আমরা ডাকসুর গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করেছি। দীর্ঘদিন যেহেতু ডাকসু নির্বাচন হয়নি, সেহেতু এর গঠনতন্ত্রে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে, যা সংশোধন করা এখন সময়ের দাবি। প্রার্থীদের বয়সের বিষয়টিও আলোচনা হতে পারে। এ ছাড়া অনেক বিষয় যুগোপযোগী করা দরকার বলে আমাদের মনে হয়েছে। আমরা সেগুলো মতবিনিময় সভায় তুলে ধরব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটা পাহারা নয়। তারা আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি। আমাদের কাজ সবাইকে সহযোগিতা করা।’
এর আগে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য গঠনতন্ত্র ‘যুগোপযোগী’ করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।