শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় তদন্ত কমিটি
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীকের আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলাম।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা সবাই খুবই মর্মাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি আমরা সহমর্মিতা জানাই। যে কথাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি করেছি। আমরা আশা করি তদন্তের মাধ্যমে সব কিছু বেরিয়ে আসবে।’
গত সোমবার রাতে নগরীর বাগবাড়ি এলাকার একটি মেস থেকে ২০১১-২০১২ সেশনে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী মো. সাইফুর রহমান প্রতীকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে ঘটনার পর ভাইয়ের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করে ফেসবুক একটি স্ট্যাটাস দেন প্রতীকের বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা।
তাওহিদা লেখেন, ‘আমার কলিজার টুকরা আদরের একমাত্র ভাই প্রতীক আর নাই। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগকে আমি ছাড়ব না। অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানিয়ে মাস্টার্সে সুপারভাইজার দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে শিক্ষকরা। আমার ভাইটা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। এটাই তার অপরাধ? ছয় মাস ধরে বিভাগে তিলে তিলে মেরে ফেলছে আমার ভাইকে। আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কাল আত্মহত্যা করেছে। আমার কলিজার টুকরা ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচব? ভাই রে আমি আসতেছি তোর কাছে ভাই।’
ফেসবুকে আরেক স্ট্যাটাসে শিক্ষক শান্তা লেখেন, ‘আমার ভাইটারে গত মাসেও আমি জিজ্ঞেস করেছি, আমি কী তোর বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করব? আমার ভাই বলেছিল, আপু আমি জিআরআই দিয়েছি, আমি ইউকে চলে যাবো, আমার তো রেফারেন্স লাগবে। শিক্ষকরা তাকে ভয় দেখিয়েছে, কিছু করলে রেফারেন্স লেটার দেবে না। আমার ভাইরে মেরে ফেলছে ওরা। আমি কই পাব আমার কলিজার টুকরা ভাইকে?’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতীকের মৃত্যুতে বিভিন্ন রকম আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।