সহাবস্থানের দাবি ছাত্রদলের, ‘নিয়মিত’ হলে সমস্যা নেই ছাত্রলীগের
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেছেন, ‘ছাত্রদল অন্তর্কোন্দলের কারণে ক্যাম্পাস ছেড়েছে। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা প্রভোস্টের মাধ্যমে হলে থাকলে আমাদের সমস্যা নেই।’
এদিকে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেছেন, ‘ছাত্রদলসহ সকল ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি করা হয়েছে।’
আজ সোমবার ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে দ্বিতীয় দফা মতবিনিময় করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সংসদ। বিকেলে সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের সব কেন্দ্র একাডেমিক ভবনে করার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগের নেতারা এতে আপত্তি করেছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী।
বৈঠক নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘ছাত্রদলসহ সব ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি করা হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থিতার ক্ষেত্রে যারা ডাকসুর ফি প্রদান করে সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।’ ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে স্থানান্তরের জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসাযোগ্য করার দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পরিবেশ সংসদে যেরকম সহাবস্থান আছে এটা আমরা হল ও মধুর ক্যান্টিনেও চাই। সেই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ আমাদের মধুর ক্যান্টিনে চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করব আগামীকাল থেকে মধুর ক্যান্টিনে আসব। এটাকে কেন্দ্র করে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ তৈরি হোক সেটা আমরা চাই না। নির্বাচনের তফসিলের আগে সহাবস্থান চাই। এ সময়ের মধ্যে তারা নিজেদের কর্মীদের সাথে আলোচনা করে নিতে পারে। আস্থার পরিবেশ তৈরি হলে আমরা হলে ফিরব।’ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ছাত্রদল অন্তর্কোন্দলের কারণে ক্যাম্পাস ছেড়েছে। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা প্রভোস্টের মাধ্যমে হলে থাকলে আমাদের সমস্যা নেই।’
গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটা নির্বাচন সিনিয়র শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে হয়। এখানে অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়নি। ডাকসু নির্বাচনে নিয়মের বাইরে দুর্নীতি করে এখনো কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনটা বুথ হলে রাখার পক্ষে মত দিয়েছে ছাত্রলীগ।’
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘দুটো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একটা গঠনতন্ত্র ও আরেকটি আচরণ বিধি নিয়ে। গঠনতন্ত্র নিয়ে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা সিন্ডিকেট সভায় উঠবে। সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উপাচার্য আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সে বিষয়টি দেখবে।’ তফসিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে তফসিল দেওয়া হবে। আমরা এবং আমাদের সিন্ডিকেট সদস্যরা একটা বিষয়ে একমত যে, যারা ভোট দিতে পারবে তারা যেন প্রার্থী হতে পারে।’