ক্যাম্পাসে ভোটকেন্দ্রের পক্ষে না ছাত্রলীগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হল থেকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে আগ্রহী নয় ছাত্রলীগ। ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে প্রশাসনের খসড়া আচরণবিধির সংশোধনীতে ছাত্রলীগের দেওয়া দাবিনামার প্রথম দফায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও ক্লাস-পরীক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
এ ছাড়া মাইকের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ, ডাকসু বা হল সংসদের সাবেক নেতাদের প্রচারণায় সম্পৃক্ত না করার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করার অনুমতি নেওয়ার ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা আগে অনুমতি নেওয়ার নিয়ম করার দাবি জানায় ছাত্রলীগ।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব দাবির কথা উল্লেখ করা হয়। দাবিগুলো হলো-
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যায়তনিক পরিবেশ, একাডেমিক কার্যক্রম, ক্লাস-পরীক্ষা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-লাইব্রেরির পরিবেশ ব্যাহত করে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
২. ৫ (জ) সংশোধন করে শিক্ষার পরিবেশ ও স্বাভাবিক ক্যাম্পাস জীবনের স্বার্থে মাইকের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। ছাত্র সমাবেশ বা অডিটরিয়ামের অভ্যন্তরে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে।
৩. দেয়াল লিখনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন-সাহস-সংগ্রাম প্রতিধ্বনিত হয়। ছাত্ররাজনীতির এ প্রথার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে না।
৪. মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির স্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ও হলগুলোতে নির্বাচনী বিতর্কসভার আয়োজন করতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচন একান্তই একাডেমিক-বুদ্ধিবৃত্তিক-সাংস্কৃতিক ও ছাত্র-অধিকারকেন্দ্রিক। নির্বাচনের মিথস্ক্রিয়া ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বর্তমান ছাত্রনেতা ছাড়া ডাকসু বা হলসংসদের সাবেক নেতৃবৃন্দ বা অন্য কাউকেই রাজনৈতিক প্রচারণায় সম্পৃক্ত করা যাবে না। ক্যাম্পাসের রাজনীতি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই পরিচালিত হবে।
৬. আচরণবিধি সাপেক্ষে, সাংবাদিকদের কার্যক্রম পরিচালনা করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
৭. ৫ (খ) সংশোধন করে সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করার অনুমতি ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা করতে হবে।
৮. কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধির কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে, সংক্ষুব্ধ যে কেউ চিফ রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। সেক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
৯. নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় বা অঞ্চলকে ব্যবহার বা অপব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না।
১০. শিক্ষার্থীদের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্বাচনী ব্যয়সীমা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
এর আগে গত শুক্রবার আসন্ন ডাকসু নির্বাচনের জন্য একটি খসড়া আচরণবিধি করে ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে এ বিষয়ে মতামত চায় প্রশাসন। গত শনিবারের মধ্যে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে লিখিত মতামত জানতে চাওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১০ দফা দাবি ও সংশোধনীর কথা জানাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।