ছাত্রলীগের চরিত্রে দাগ লাগানোর চেষ্টা হয়েছে : সাদ্দাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ডাকসুর ভিপিসহ অন্যদের ওপর হামলা এবং ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনাটি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ। তারা এই ঘটনাকে ‘নাটক’ সাজিয়ে ছাত্রলীগের চরিত্রে দাগ লাগানোর চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।
সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোনো ছাত্রীদের লাঞ্ছনা করেনি। আর কারো ওপর হামলার প্রশ্নই আসে না। হামলার নাটক সাজিয়ে আমাদের চরিত্রে দাগ লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গুজব পারদর্শিতার ওপর ভিত্তি করে তথাকথিত ভূঁইফোড় সংগঠনের উদ্ভব হয়েছে।’
ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনাকে আকাশ-কুসুম বলে দাবি করেন ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসাইন। তিনি বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভিডিও সয়লাব হয়েছে। সেখানে দেখবেন, প্রভোস্টের সঙ্গে যে কথোপকথন সেখানে নুর স্বীকার করেছে তাঁর ভুল ছিল, তার প্রক্রিয়া ভুল ছিল। বাইরে এসে সে সাংবাদিকদের বলেছে, কোনো নারী শিক্ষার্থী সেখানে যায়নি। ভেতরে আমরা ছবি দেখেছি। আবার প্রভোস্ট অফিসে যখন যায় তখন ছাত্রী নিয়ে যায়। পরে সে বলে তাঁর সঙ্গে ছাত্রী ছিল না।’
সাদ্দাম অস্বীকার করলেও মঙ্গলবার শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি, ডাকসুর স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির অভিযোগ করেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে তাঁদের ওপর ডিম হামলা করেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, হল সংসদের ভিপি ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন, জিএস জুলিয়াস সিজার তালুকদার, সাহিত্য সম্পাদক আকিব মোহাম্মদ ফুয়াদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, ফরিদকে মারধরের ঘটনায় আমরা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রভোস্টকে লিখিত অভিযোগ জানাতে এসএম হলে যাই। আমরা হলের নিচে অপেক্ষা করছিলাম, নুর ফরিদকে নিয়ে তাঁর রুমে যায় রক্তমাখা ড্রেস পাল্টানোর জন্য। সে সময় হল ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাদেরকে বিভিন্ন অশালীন কথা বলে এবং এক সময় তারা আমাদেরকে ডিম ছুড়ে মারে। এরপর আমরা এসএম হলের মূল গেটে অবস্থান নেই। নুর ভেতরে অবরুদ্ধ ছিল। ভেতর থেকে নুরসহ অন্যরা যখন বের হয়, তখন আমরা দেখি ছাত্রলীগের হল শাখার নেতৃবৃন্দ আমাদের পেছনে পেছনে আসতে থাকে। একপর্যায়ে তারা এলোপাতাড়ি লাথি, কিল ঘুষি মারা শুরু করে। আমাকে উদ্দেশ করে একজন বলে, ‘এরে ধর ধর’! আরেকজন আমার পেটে লাথি মারে।’
শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছেলেদের হল হওয়ায় আমরা গেটের বাইরে অবস্থান করছিলাম। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের উদ্দেশ করে আপত্তিকর উক্তি করে।’
ঢাবির উর্দু বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ফরিদ হাসানকে মারধরের ঘটনার অভিযোগ দিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে যান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন, শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি, ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, অরণি সেমন্তি খানসহ কয়েকজন। সে সময় নুরসহ ছাত্রনেতারা হলটির ভেতরে গেলে সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয় ও অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন, জিএস জুলিয়াস সিজার তালুকদার, সাহিত্য সম্পাদক আকিব মোহাম্মদ ফুয়াদসহ অন্যদের হাতে লাঞ্ছিত হন সেমন্তি, ইমি ও বেনজিরসহ ছাত্রীরা। তাদের গায়ে ডিমও ছুঁড়ে মারেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।