নানা আয়োজনে রাবির ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গৌরব-ঐতিহ্যের ৬৬ বছর পার করল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। ‘শিক্ষা শান্তি প্রগতির ধারা আজও আমাদের সাথী, অবিরাম এই চলার ছন্দে আমরা অলোর জ্ঞাতি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।
পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা পূর্ববর্তী এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘প্রতিটি জন্মদিন আনন্দের। হোক সেটা মানুষ বা প্রতিষ্ঠানের। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর গৌরবের ৬৬ বছর পার করেছে। আমরা আজ আনন্দিত। যারা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো বিতরণের জন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দরকার ছিল। তারা সেই কাজটি করেছেন। ভবিষৎ প্রজন্ম এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা নেবে, শিক্ষিত হবে, জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হবে। এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার প্রমুখ।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে আন্তকলেজ চ্যাম্পিয়ন ও বিভাগ চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে প্রশাসন। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়।
১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। একই বছরের ৬ জুলাই ড. ইৎরাত হোসেন জুবেরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় পদ্মাপাড়ের বড় কুঠি ও রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬১ সালে বড় কুঠি থেকে নয়নাভিরাম মতিহারের এ সবুজ চত্বরে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। রাজশাহী শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত এ ক্যাম্পাসটি ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টর জমিতে স্থাপিত।
শুরুতে দর্শন, ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, গণিত ও আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি অনুষদের অধীনে ৫৯টি বিভাগ রয়েছে। তা ছাড়া উচ্চতর গবেষণার জন্য রয়েছে ছয়টি ইনস্টিটিউট। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ২৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন।