‘ছাত্রলীগ রাখেনি, ডাকসু কেন রাখবে’, রাব্বানী সম্পর্কে ভিপি নুর
সারা দেশে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ এখন ছাত্রলীগ থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপসারণের বিষয়টি। সংগঠনটিতে নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব নিয়েছেন।
কিন্তু এরই মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বহাল থাকা নিয়ে। অনেকেই মনে করছেন, যে অভিযোগে গোলাম রাব্বানী ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন, সেই একই কারণে তাঁর ডাকসুর পদও ছেড়ে দেওয়া উচিত।
তবে ডাকসুর মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে সদ্য সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্যপদ ছেড়ে দিলেও গোলাম রাব্বানী এখনো নিজের পদ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। যদিও তিনি সবশেষ এক পোস্টে নিজের ‘কৃতকর্মের’ জন্য ‘অনুতপ্ত’ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করেছেন। এ অবস্থায় গোলাম রাব্বানী পদত্যাগ না করলে ডাকসুর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ভিপি নুরুল হক নুর।
গতকাল সোমবার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে নুর বলেন, ‘গোলাম রাব্বানী যেহেতু তাঁর নিজ ছাত্র সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন চাঁদাবাজির অভিযোগ মাথায় নিয়ে, সেখানে তিনি কী করে ডাকসুর জিএস পদে থাকেন? যেখানে ছাত্রলীগই তাঁকে রাখেনি।’
নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগ তো শুধু একটা ছাত্র সংগঠন। আর ডাকসু তো হলো সব ছাত্র সংগঠনের একটা প্ল্যাটফর্ম। সেখানে এমন বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ তো থাকতে পারে না। তাহলে তো সারা দেশের সব ছাত্র সংগঠন বিতর্কিত হবে।
গোলাম রাব্বানীর বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ডাকসুর ভিপি বলেন, ‘আমি নিজেই এ বিষয় নিয়ে ডাকসু সভাপতি ও ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তিনি বলেছেন, গঠনতন্ত্র দেখে ব্যবস্থা নেবেন। দরকার হলে ডাকসুর মিটিং ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
‘বর্তমান জিএসের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগের পর আমরা আশা করেছিলাম, তিনি নিজের সম্মানের দিকে তাকিয়ে পদত্যাগ করবেন। অথচ তিনি এখনো সেটি করেননি। নৈতিক দিক থেকে হলেও তাঁর পদত্যাগ করা দরকার ছিল। যিনি চাঁদাবাজির অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে নৈতিকতা আশা করা যায় না। নৈতিকতা থাকলে তো এত বড় পদে থেকে এসব করতে পারতেন না।’
নুরুল হক আরো বলেন, ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগী সভাপতি নিজের বিবেকের তাড়নায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের দিকে তাকিয়ে সিনেট থেকে পদত্যাগ করেছেন। অথচ গোলাম রাব্বানী এখনো ডাকসু থেকে পদত্যাগ করেননি।’
ডাকসুর এই ভিপি বলেন, ‘আমরা চাই, গোলাম রাব্বানী নিজ থেকে ডাকসুর প্রতি সম্মান রেখে পদত্যাগ করুক। না হলে ডাকসুতে বিষয়টি আলোচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া ডাকসুর গঠনতন্ত্রেও আছে, সভাপতি চাইলে কারো বিরুদ্ধে অনুযোগ থাকলে তাঁকে বহিষ্কার করতে পারেন। তবে বহিষ্কৃত হওয়ার চেয়ে নিজে থেকে সরে গেলে সেটাই হবে সম্মানের।’
এদিকে ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এরই মাঝে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। বিষয়টি কীভাবে ন্যায়সংগতভাবে সমাধান করা যায়। আমরা আমাদের সিনিয়র ডাকসু নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করছি, তাঁদের পরামর্শ নিচ্ছি কীভাবে এ সমস্যা মোকাবিলা করা যায়।’