শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা থেকে প্রার্থীকে বের করে দিল পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ!
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর পর যৌক্তিক কারণ ছাড়াই প্রবেশপত্র কেড়ে নিয়ে সাবরিনা ইয়াসমিন নামের এক পরীক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পরীক্ষা শুরু সময় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। ওই পরীক্ষার্থী কক্ষ থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
পরীক্ষার্থী সাবরিনা ইয়াসমিনের অভিযোগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তিনি। সব শর্ত পূরণ করে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রভাষক পদে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ইস্যু করে।
আজ শুক্রবার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে ১ নম্বর গ্যালারি কক্ষে পরীক্ষার জন্য আসলে যথারীতি তাঁকে খাতা ও প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয়। তবে, প্রশ্নপত্র দেওয়ার পর পরই আকস্মিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাসসহ দুইজন পরীক্ষক এসে তাঁর প্রবেশপত্র ও খাতা কেড়ে নিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন।
সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাঁর প্রভাষক পদে আবেদনের যোগ্যতা নেই বলে জানান। যোগ্যতা না থাকলেও কেন প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। ভিসি স্যার কেন পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এসব জানতে চাইলে তাঁরা কোনো উত্তর দেননি। এরপরও বার বার পরীক্ষা দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাঁরা কোনো কথাই শোনেননি।
সাবরিনা আরো জানান, তিনি এসএসসিতে ৪.৩৮, এইচএসসিতে ৩.৮০ এবং সম্মান শ্রেণিতে ৪ এর ভেতর ৩.৫৬ রেজাল্ট রয়েছে- যা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যথেষ্ট।
পরীক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, ‘আমি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য নই। কমিটির সদস্যরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’ তবে তাঁকে ভুল করে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, ‘দুটি প্রভাষক পদের জন্যে মোট ৪৯ জন আবেদন করলে যাচাই বাছাই শেষে ৪৪ জনকে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়। পরীক্ষায় ২৯ জন অংশ নেন। আমাদের পরিকল্পনায় অনাকাঙ্ক্ষিত একটু ভুল হয়েছে। তবে ওই মেয়েটির এইচএসসিতে ফোর পয়েন্ট নেই বলেই পরীক্ষা কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
পরীক্ষার্থী সাবরিনা ইয়াসমিনের ভাই রেজাউল হক বলেন, ‘আমার বোন অত্যন্ত মেধাবী, বিষয়টি ওই বিভাগের সব শিক্ষক জানেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তাঁকে আটকানো খুব কঠিন হত। কর্তৃপক্ষ মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতেই নিয়োগ পরীক্ষার নাটক সাজিয়েছেন। এ কারণেই আমার বোনকে অত্যন্ত অপমানজনকভাবে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে পাবিপ্রবির প্রো-ভিসি ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ভাইভা বোর্ডে আছি, বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলছি।’
তবে ভিসি ড. রোস্তম আলীর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে বন্ধ করে দেন। বিকাল ৪টার দিকে উভয়ের ফোন খোলা থাকলে অনেকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।