আবরারকে নিয়ে পথনাটক, চোখে পানি কিন্তু মুখে স্লোগান
বুয়েটের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। চলছে পথনাটক। অভিনয় করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই। আর সেই নাটক দেখার জন্য জমেছে ভিড়।
রাস্তায় পড়ে আছে ছেলেটি। চারদিকে ঘুরছে চারটি তরুণ। তাদের হাতে বেল্ট আর লাঠি। একজন একজন করে ছেলেটি পেটাচ্ছে। ছেলেটি চিৎকার করে বলছে, ‘ভাই আমারে মাইরেন না।’ এক পর্যায়ে তরুণরা সবাই মিলে মারছে ছেলেটিকে।
নিথর হয়ে যাওয়ার আগে ছেলেটি বলল, ‘লা ইলাহা ইল্লাললাহু মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’
দৃশ্যপটে আসেন মা। চিৎকার করে বলেন, ‘আমার ছেলে কী অপরাধ করেছিল?’ তিনি বলতে থাকেন, ‘ফাঁসি চাই।’ একযোগে সবাই বলতে থাকেন ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’ স্লোগানটা ছড়িয়ে গেল পুরো প্রাঙ্গণে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে দর্শকরাও গলা মেলালেন, ‘শিক্ষা, সন্ত্রাস এক সাথে হবে না। খুনিদের ঠিকানা এই বুয়েটে হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই পথ নাটক অনুষ্ঠিত হয়। ওই পথনাটকের মাধ্যমে আবরার হত্যার নৃশংসতা তুলে ধরেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
নাটক শেষে সবার চোখে পানি। কিন্তু কাউকেই ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। বরং বজ্রকণ্ঠে স্লোগান দিয়েছে সবাই, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না।’ সময় গড়িয়েছে। স্লোগান হয়েছে আরো দৃঢ়।
এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে আগামীকাল শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে বুয়েট উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। তা না হলে বুয়েটের সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট উপাচার্যকে আলটিমেটাম ছাড়াও শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। সেইসঙ্গে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে প্রশাসনিক ভবন থেকে আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে নোটিশ দিতে বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের পর শিক্ষার্থীরা বুয়েটের শেরেবাংলা হল প্রদক্ষিণ শেষে আবারও শহীদ মিনারে গিয়ে একত্রিত হন। সেখানে তারা আবরার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবিসহ নানা স্লোগান দেয়।