প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে রাতে ইবি ছাত্রীদের বিক্ষোভ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. সেলিনা নাসরিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন আবাসিক ছাত্রীরা। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে হল গেটের সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
জানা যায়, ছাত্রীদের সঙ্গে প্রভোস্টের খারাপ আচরণ, হুমকি, স্বেচ্ছাচারিতা ও রাজনৈতিক হয়রানিসহ বিভিন্ন কারণে বাধ্য হয়ে আন্দোলন করেন ছাত্রীরা।
ছাত্রীরা বলেন, ‘প্রভোস্ট ম্যাম আমাদের কোনো দাবি শোনেন না। তিনি কথায় কথায় বলেন, হল কি তোমার বাবার? আমরা তাঁর বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করায় তিনি আমাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন প্রভোস্ট।’
এ ছাড়া হলে সিট পেতে হলের ছাত্রলীগ নেত্রী প্রিয়াঙ্কা বোস রাখি কর্তৃক রাজনৈতিক হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। ছাত্রীরা জানান, প্রিয়াঙ্কা বোস তাদের বলেন, হলে সিট পেতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে। ‘ছাত্রলীগ করলে হলে থাকতে পারবি, না করলে হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।’
এদিকে, আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ আন্দোলন প্রত্যাহার করে হলে ফিরে যেতে ছাত্রীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা হলের অভ্যন্তরীণ গেটে তালা দেন। ছাত্র উপদেষ্টা বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে হলের গেটে আসেন। পরে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। রাত ১১টার দিকে ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রীদের দাবি শুনেছি। ওই সময় কোষাধ্যক্ষও ছিলেন। ছাত্রীরা প্রভোস্টের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। খুব দ্রুত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রভোস্টের আচরণ নিয়ে তাদের কঠোর আপত্তি রয়েছে।’
জানা যায়, ছাত্রীদের সঙ্গে হল প্রভোস্টের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, নিয়ম না মেনে অন্য হলের ছাত্রীকে সিট প্রদান, স্বেচ্ছাচারিতাসহ ১৮টি অভিযোগ এনে গত ১ অক্টোবর উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ হলের ছাত্রীরা দিয়েছেন।