জাবিতে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে মিছিলটি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুরাদ চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
‘ভিসি তোমায় জানিয়ে দিলাম ওয়ালাইকুমুস সালাম’, ‘ছিঃ ছিঃ প্রশাসন, টাকার জন্য মরণ পণ’, ‘দুর্নীতিবাজ প্রশাসন মানি না মানব না’, ‘ফারজানা আর এনামুল একই বৃন্তে দুটি ফুল’, ‘আওয়ার ক্যাম্পাস আওয়ার রাইট, সেভ দ্য ক্যাম্পাস জয়েন দ্য ফাইট’ স্লোগানের মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল থেকে উপাচার্য অপসারণের জোরালো দাবি জানান।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে অধ্যাপক ড. এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘উপাচার্য ও তাঁর পরিবার দুর্নীতিবাজ। তাঁর আশপাশের শিক্ষকরা দুর্নীতি ঢাকতে মাঠে নেমেছেন। দল বড় করলেই দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে যায় না। তারা আপনার কোনো সাহায্য করতে পারবে না। তারা অবশ্যই সত্যের কাছে পরাহত হবে। উপাচার্য আপনি দুর্বৃত্ত। আপনার এ পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। আমরাও কালো তালিকা করব। বউ, সন্তান, ভাইবোনকে চাকরি দেওয়ার লোভে যে মহাসমাবেশ হয়েছে তা টিকবে না। এদেরও একদিন বিচার হবে।’
এ সময় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘যারা দুর্নীতি স্পষ্ট হওয়ার পরও মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দুর্নীতি খুঁজছেন তারা আর যাই হোক জাহাঙ্গীরনগরের পক্ষে নয়। যারা উপাচার্য নির্দোষ বলে নতুন ব্যানার নিয়ে নেমেছেন তারা মূলত সমাধান চান না। তারাই আপনাকে বিপদে ফেলবে। সমাধানের পথ এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি। আপনাকে তদন্ত কমিটির মাধ্যমেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে। তদন্ত না করে বিকল্প ব্যানারে কর্মসূচি পালনে আপনি গ্রহণযোগ্যতা হারাবেন। তা না হলে জাহাঙ্গীরনগর জিতবে আর আপনি ধ্বংস হবেন।’
ছাত্রদের পক্ষে বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মাক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাতির মোহাম্মদ উপাচার্যকে স্বৈরাচারের ‘আশ্চর্য দৃষ্টান্ত’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এই উপাচার্যই ২০১৭ সালে মামলা দিয়ে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে নিজ বাসার সামনে থেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তিনি বলেছেন মাস্টারপ্লান একনেকে পাস হওয়ার আগে সব অংশীজনের মতামত নেওয়া হবে। কিন্তু কারো মতামত ছাড়াই একনেকে পাস হয়ে গেল। টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনার পর জানা গেলো যে মাস্টারপ্লান একনেকে পাস হয়েছে। উপাচার্য শুধু দুর্নীতিবাজই না, তিনি মিথ্যাবাদী, অথর্ব, লুটপাটকারী ও অযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে ভারপ্রাপ্ত লোক দিয়ে তিনি তাঁর অযোগ্যতাই প্রকাশ করেছেন।’
আগামীকাল দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সাধারণ সভার ঘোষণা দিয়ে সভায় সবাইকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি মাহাতির মোহাম্মদ।
ক্যাপশন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আজ বুধবার বিক্ষোভ মিছিল করে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি : এনটিভি