ঢাবিতে ছাত্রদলকে ডিবির তাড়া, ‘ছাত্রলীগের’ মারধর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদলের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ হামলা চালানো হয় বলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় ছাত্রদলের পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মামুন খান, শাহজাহান শাওন, মাহফুজ চৌধুরী, হাসান তারেক ও নুর আলম ইমন। তাঁদের মধ্যে মামুন খান নামের একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাবির সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সংবাদ সম্মেলন শেষ করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা বের হন। এ সময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁদের তাড়া করে ক্যাম্পাস-ছাড়া করে বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদলের নেতারা। তাঁরা বলেন, এ সময় ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ একটি বড় অংশের নেতাকর্মী ক্যাম্পাস ত্যাগ করে চলে যান।
এর আধা ঘণ্টা পর ছাত্রদলের একটি অংশ মধুর ক্যান্টিনে আসে। তার পর পরই এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ হামলার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে দুপুর ১২টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলকে ঢাবি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক আইডি থেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে এমন অভিযোগ আনা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত ক্যাফেটেরিয়া ও কমনরুমবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কানেতা ইয়া লাম লাম দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদলের কর্মীরা চেয়ার-টেবিল না পেয়ে ফ্লোরে বসে ছিলেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুনসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় ছাত্রদলের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।’
কানেতা ইয়া লাম লাম আরো বলেন, ‘আমাকে ও ডাকসুতে ছাত্রদলের হয়ে শামসুন নাহার হলের ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মানসুরা আলমকে ছাত্রলীগ নেতারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।’
ছাত্রদলের দাবি, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাবি শাখার সভাপতি আল সনেটের নেতৃত্বে প্রথমে হামলা চালানো হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
ঢাবির শিক্ষার্থীদের অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাঁদের অনেকেই আবার সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ছাত্রদলের ওপর হামলার ব্যাপারে তিনি পরে কথা বলবেন।
এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এক ছাত্র আরেক ছাত্রকে কখনোই মারতে পারে না। এটা কাম্য নয়।’
তবে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও ছাত্রলীগের কারো সঙ্গে কথা বলা যায়নি।