সিনেমা হলের আশপাশে ঘুরব : শাকিব খান
বাংলাদেশে আজ ঈদকে কেন্দ্র করে মুক্তি পেয়েছে পাঁচটি ছবি। এর মধ্যে তিনটিই শাকিব খান অভিনীত। তিনটি ছবি হলো আবদুল মান্নান পরিচালিত ‘পাঙ্কু জামাই’, আশিকুর রহমান পরিচালিত ‘সুপার হিরো’ ও উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘চিটাগাংইয়া পোয়া নোয়াখাইল্লা মাইয়া’। গতকাল ওপার বাংলায় ঈদ উপলক্ষেই মুক্তি পেয়েছে শাকিব খানের ‘ভাইজান এলো রে’। নতুন চলচ্চিত্র ও অভিনয় প্রসঙ্গে ঈদের দিন শাকিব খান কথা বলেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
প্রশ্ন : কলকাতায় কেমন চলছে ‘ভাইজান এলো রে’?
শাকিব খান : আসলে কেমন চলছে সেটা বলে বোঝানো যাবে না। শহরজুড়ে ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে। আশিটার মতো সিনেমা হলে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজ অনেক বড় আয়োজন করে ছবিটি মুক্তি দিয়েছে। আমি জানি না এর আগে বাংলাদেশের কোনো তারকার ছবি এত আয়োজন করে কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে কি না। সেখানকার গণমাধ্যম ও দর্শকদের মাধ্যে আমি ব্যাপক আগ্রহ দেখেছি। সবচেয়ে বড় কথা কিছুদিন আগে যেখানে আমাদের দেশে কলকাতার তারকারা দাপট দেখাত, সেখানে এবার কলকাতায় দাপটের সাথে আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। এটাও তো কম পাওয়া নয়।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে এবারের ঈদে আপনার তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে, আপনার অনুভূতি কী?
শাকিব খান : আমার অনুভূতি একটু খারাপ। সংখ্যা তিন। কথা হলো আমি ছবির সংখ্যা বাড়াতে চাই না। কোয়ালিটি বাড়াতে চাই। দর্শক যেমন ছবি দেখতে চায়, আমি তেমন ছবি দেখাতে চাই। কিন্তু এটা আমার একার কাজ নয়। সবার সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। এই তিনটা ছবির মধ্যে ‘সুপার হিরো’ বেস্ট। কিন্তু এই ছবিটি মুক্তি নিয়ে যা হলো তাতে নতুন করে ভালো ছবি নির্মাণ করার উৎসাহ হারাবে প্রযোজকরা। আমাদের দেশের একটি ভালো ছবির পাশে তো সবার থাকা উচিত। কিন্তু তা হচ্ছে না, বারবার ভালো কাজগুলোকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন অবস্থা যদি হতে থাকে, তা হলে তো যুব সমাজ সিনেমা হলে যাবে না, কারণ তারা বর্তমান সময়ের মানুষ, কোয়ালিটি ছাড়া ছবি তারা দেখবে কেন? ভালো ছবি উপহার দিতে না পারলে তারা মাদকের দিকেই ঝুকবে। আমি মনে করি, নির্মল বিনোদন না থাকলে যুবসমাজ বিপথে যাবে।
প্রশ্ন : কারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভালো চলচ্চিত্রের?
শাকিব খান : এটা কেন আমাকে বলতে হবে? আমি তো মনে করি সবাই জানে কারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটা ছবি নির্মাণ করার পর চলচ্চিত্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের ভুল ধরার চেষ্টা করে। আপনি এভাবে দাঁড়ালেন কেন, এভাবে কথা বলছেন কেন? আমার তো মনে হয় এক তথ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ চান না আমাদের ছবি ভালো হোক। চলচ্চিত্রের অনুষ্ঠানে শুধু বড় বড় কথা বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র বিশ্ব মানের করতে হবে বলেন, কিন্তু বিশ্ব মানের ছবি নির্মাণ করার কোনো ধরনের সহযোগিতা করেন না। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আমাদের ছবি এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। তারপরও আমি তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তিনি যদি দেশের ছবির পক্ষে না থাকতেন, তাহলে আমাদের দেশের ছবি একেবারেই বন্ধ হয়ে যেত।
প্রশ্ন : অনেকেই বলেন আমাদের তথ্যমন্ত্রী দেশি চলচ্চিত্রের ক্ষতি করছেন?
শাকিব খান : এটা কারা বলেন? যাঁরা ছবি নির্মাণ করেন না, এটা তাদের কথা। তারাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নেতা সেজে বসে থাকেন। আরে আগে ছবি নির্মাণ করুন, তারপর কোনো সমস্যা হলে তাঁর কাছে যান। গিয়ে দেখেন তিনি কী সহযোগিতা করেন। আপনি ১০ বছরে একটা ছবিও নির্মাণ করবেন না, আর অনুষ্ঠানে গিয়ে বলবেন তথ্যমন্ত্রী সহযোগিতা করছেন না, তাহলে কি হবে?
প্রশ্ন : সিনেমা দেখতে হলে যাবেন কি?
শাকিব খান : আসলে এখন আর আগের মতো সিনেমা হলে যেতে পারি না। গেলে অনেক মানুষ ভিড় করে, তাদের সাথে কথা বলতে হয়, এতে সিনেমা হলের ক্ষতি হয়। তবে আমার ইচ্ছে আছে সিনেমা হলের আশপাশে ঘুরব। দূর থেকে দেখব সবাই কীভাবে ছবি উপভোগ করছে। এটাই আমার ঈদের আনন্দ।
প্রশ্ন : দর্শকদের উদ্দেষে কিছু বলবেন?
শাকিব খান : আসলে সব কিছুর পর দর্শকই সব। তাদের জন্যই এত কষ্ট করা। আমি সবার উদ্দেশে বলব, মাদক কোনো সমাধান নয়। জীবনে বিনোদন দরকার আছে, সেটা সিনেমা দেখা, খেলাধূলা করা, ঘুরতে যাওয়ার মধ্যে অনেক বেশি আনন্দ। আমি চেষ্টা করব এমন ছবি উপহার দিতে যেখানে আপনারা ভালো বিনোদন পাবেন। সরকার পর্যটন অঞ্চলগুলো ভালো করছে সেখানে ঘুরতে পারেন। আর তরুণদের বলব, সবারই উচিত বিকেলে সময় করে খেলাধূলা করা।