মা-বাবাদের পথে নামতে বাধ্য করবেন না : ওমর সানি
‘দয়া করে বাচ্চাদের গায়ে হাত দেবেন না। তারা কোন আসনের নমিনেশন পাবার জন্য পথে নামে নাই, তাদের দাবি পথের নিরাপত্তা কেবল। এই দেশের পরবর্তী কর্ণধার এই বাচ্চারাই। এখনো অনেক বাচ্চা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বাচ্চাদের মাথায় লাঠির আঘাত নয়, ভরসার হাত রাখুন। মা-বাবাদের পথে নামতে বাধ্য করবেন না দয়া করে। ওরা আমাদের সন্তান। নাড়ি ছেঁড়া ধন! জারজ নয়!’ সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশ যখন উত্তাল এমন সময়, গতকাল মঙ্গলবার এসব কথা নিজের ফেসবুকে বলেন নায়ক ওমর সানি।
রাস্তায় মানুষ খুন করা হচ্ছে দাবি করে স্ট্যাটাসে ওমর সানি বলেন, ‘সড়কে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পায়েল হত্যার দাগ এখনো দগদগে। সে ক্ষত গত হওয়ার আগেই আজ সড়কে খুন হলো রমিজ উদ্দিন ক্যান্টের তিন শিক্ষার্থী। নিত্য নৈমিত্তিক এ ঘটনাকে এখন আর দুর্ঘটনা বলতে রাজি নই। আমি এসব ঘটনাকে খুনের শামিল হিসেবে ধরি।’
এ বিষয়ে সানি আরো বলেন, ‘অপরিকল্পিত একটি শহরে দুই কোটি মানুষের বসবাস। নিঃশ্বাস ফেলানোর আগেই যে শহরে, যে দেশে জ্যাম লেগে যায়, হাইওয়ে রোডে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের মতো প্রতিযোগিতা লেগে যায়, গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসার আগেই ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেয়ে যায়, শ্রমিক পরিবহনে মাফিয়াদের কালো হাতের থাবা পড়ে যায়, সিন্ডিকেটে ঝুলে যায় যাত্রীদের জীবনের হিসেব নিকেশ, সে শহরে এসব দুর্ঘটনা রীতিমতো খুনের পর্যায়ে পড়ে যায়।’
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না পাওয়ার প্রতিবাদ করে সানি আরো বলেন, ‘প্রতিনিয়ত এসব ঘটনা ঘটার পরবর্তী সময়ে ক্ষতিপূরণ মিলে সামান্য কয়েক হাজার টাকায়, জীবনকে কনভার্ট করা হয় পাঁচ ডিজিটের নাম্বারে। দু-একটা মানববন্ধন, তিন চারটে নিউজ কভারেজ, শ্রমিক মালিক সভাপতির দুঃখ প্রকাশ, বিচারের আওতায় আনার জন্য মন্ত্রীর আশ্বাস, পুলিশের হাত গলে বের হয়ে যাওয়া আসামী না মেলায় ক্ষতিপূরণ, না মেলায় লাশের আশাপূরণ। বরং অমানুষের বাচ্চারা হয়ে ওঠে দানব থেকে জল্লাদ। সেজন্য এক অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর শংকা নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে ঘোরের মধ্যে শুনতে পাই, আমিই ভূত, শূয়োর কিংবা জল্লাদ।’