কঙ্গনাকে বিশ্বাস করা কঠিন, ফের সোনমের খোঁচা!
পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে সাবেক ভারতসুন্দরী ও অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তর যৌন হেনস্তার অভিযোগের পর বি-টাউনে হ্যাশট্যাগ দিয়ে মি টু আন্দোলন শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী ‘অপরাধীর’ নাম প্রকাশ করেছেন। আর এসব নিয়ে বিনোদন জগতে তোলপাড়।
সম্প্রতি যাঁর নাম প্রকাশ পেয়েছে, তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্যান্টম ফিল্মস-এর সহ-কর্ণধার বিকাশ বেহল। তিনি ছাড়াও ফ্যান্টম ফিল্মসের অন্য কর্ণধাররা হলেন অনুরাগ কাশ্যপ, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানি ও মধু মান্তেনা। তবে ফ্যান্টম ফিল্মস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্যান্টম ফিল্মস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিকাশ বেহলের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগকেই দায়ী করা হয়েছে।
বলিউড ‘কুইন’ কঙ্গনা রানাউতের অভিযোগ, চলচ্চিত্র পরিচালক বিকাশ বেহলের আচরণ আপত্তিকর। ‘কুইন’ ছবির শুটিং চলাকালে তাঁকে যৌন হেনস্তা করেছেন বেহল।
৩১ বছর বয়সী অভিনেত্রী কঙ্গনা বলেন, প্রথমবার যখন পরিচালকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখন তিনি তাঁকে অত্যন্ত জোরে চেপে ধরেছিলেন এবং তাঁর চুলের গন্ধ নিয়েছিলেন।
“প্রতিবার কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হলে আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে অভ্যর্থনা জানাতাম। আর প্রতিবারই সে আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিত, আমাকে খুব জোরে চেপে ধরে আমার চুলের গন্ধ নিত। নিজেকে ওঁর কবল থেকে মুক্ত করতে বেশ বেগ পেতে হতো আমার। ও বলত, ‘তোমার গন্ধটা খুব ভালো লাগে,’” বলেন কঙ্গনা।
যাহোক, এই ইস্যু এখন অন্য বিতর্কে মোড় নিয়েছে। বলিউড অভিনেত্রী সোনম কাপুরের সঙ্গে এর আগেও কঙ্গনার ‘গরম’ কথা চালাচালি চলেছে। বেহল-বিতর্কের পর ফের নতুন যুদ্ধে নেমেছেন দুই তারকা!
ব্যাঙ্গালুরুতে ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘ভোগ’-এর ‘উই দ্য ওম্যান সামিট’-এ সোনম কাপুর তনুশ্রী দ্ত্তর সাহসের প্রশংসা করেছেন এবং তনুশ্রীর জীবনে ঘটে যাওয়া হেনস্তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।
তবে কঙ্গনার ‘মি টু গল্পের’ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে সোনম বলেন, মাঝেমধ্যে তাঁর (কঙ্গনা) কথা বিশ্বাস করা কঠিন। তিনি অনেক কথাই বলেন।
‘আমি মনে করি, কঙ্গনা কিছু লিখেছেন। কঙ্গনা তো কঙ্গনা রানাউতই। তিনি অনেক কথাই বলেন এবং কখনো কখনো তাঁকে আন্তরিকভাবে নেওয়া কঠিন। আমি এ ব্যাপারটা ভালোবাসি যে তাঁর ভেতরে তেজ আছে। তিনি যা বিশ্বাস করেন, তা বলেন। এ জন্য তাঁকে শ্রদ্ধা করি। আমি তাঁকে চিনি না, আমি ওই অবস্থা সম্পর্কে জানি না। যদি যা লেখা হয়, তাই-ই সত্য হয়ে যায়, তাহলে তা বিরক্তিকর, আতঙ্কের। যদি তা সত্য হয়, তাহলে তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত,’ বলেন সোনম।
সোনমের বক্তব্যে চটেছেন কঙ্গনা। বিনোদন সংবাদমাধ্যম পিংকভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা বলেছেন, “‘কঙ্গনাকে বিশ্বাস করা কঠিন’ বলতে সে কী বুঝিয়েছে? যখন আমি আমার মি টু গল্প বললাম, তখন এ ব্যাপারে জাজ করার অধিকার তাঁকে কে দিয়েছে? কার ওপর আস্থা রাখবে আর কার ওপর রাখবে না, তার লাইসেন্স আছে সোনম কাপুরের। আমার অভিযোগ নিয়ে কি তাঁকে অনিশ্চয়তায় ফেলল? আস্থাভাজন হিসেবে আমি পরিচিত, আন্তর্জাতিক বহু সামিটে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। সেসব সামিটে একজন চিন্তাশীল ও তরুণদের প্রভাবক হিসেবে আমাকে ডাকা হয়েছে।”
সোনম বলেছিলেন, তিনি কঙ্গনাকে চেনেন না। তার উত্তরে খোঁচা দিয়ে কঙ্গনা বলেন, ‘আমি পরিচিত না, কারণ বাবাকে দিয়ে আমার জায়গা অর্জন করিনি। এক দশক কঠিন সংগ্রাম করে আমার জায়গাটা অর্জন করেছি।’
সোনম কাপুর তারকা-কন্যা, জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতা অনিল কাপুরের মেয়ে। বলিউডে স্বজনপ্রীতি নিয়েও সোচ্চার কঙ্গনা। এমনকি সোনমের অভিনয়দক্ষতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
‘ভালো অভিনেতা হিসেবে সে পরিচিত নয়। না সে পরিচিত ভালো বক্তা হিসেবে। এসব মানুষ কীভাবে আমাকে নিয়ে কথা বলার অধিকার পায়? এঁদের প্রত্যেককে আমি ধ্বংস করে দেবো,’ বলেন কঙ্গনা।
অবশ্য ওই অনুষ্ঠানে সোনম কাপুর অভিযুক্ত বিকাশ বেহলকে নিয়ে মুখ খোলেন এবং ভুক্তভোগীর প্রতি তাঁর সমর্থন জানান।
‘সবকিছুই ঘটেছে ফ্যান্টমে। এটা জঘন্য। যদি আপনি ওই নিবন্ধটি পড়েন, এটা জঘন্য। আমি এসব মানুষকে চিনি, আমি তাঁদের সবাইকে চিনি। আমি জানি না কীভাবে এসব মানুষের সঙ্গে চলব।’ সোনম আরো বলেন, তিনি নারীকে বিশ্বাস করেন। সূত্র : ডিএনএ।