ক্ষুধা লাগলেই শট এনজি হয় : সিফাত
‘প্রথমবারের মতো পরীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমি খুব খুশি। ছোটবেলা অন্য সবার মতো পরীর প্রতি আমার ভালোলাগা ছিল। পরীর প্রতি আমার কৌতূহল এখনো কাটেনি।’ কথাগুলো এনটিভি অনলাইনকে বলেছেন হালের আলোচিত অভিনেত্রী সিফাত নাইরুজ।
রূপকথার গল্প নিয়ে নির্মিত ‘মায়া মসনদ’ ধারাবাহিক নাটকে পরীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে সিফাতকে। এটি পরিচালনা করেছেন এস এম সালাহ্ উদ্দিন। ‘মায়া মসনদ’ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত সিফাত। বললেন, ‘ভিএফএক্স টেকনোলজিতে নাটকটি নির্মাণ হচ্ছে। তাই শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা অন্য সব নাটকের থেকে একেবারে আলাদা ছিল। কোনো সেট নেই।’
পরিচালক দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার পর শুটিং করতে বেশি সময় নেন না সিফাত। তবে মাঝেমধ্যে তাঁর শট এনজি হয় বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে সোজাসাপ্টাভাবে সিফাত বলেন, ‘অন্য কোনো কারণ নেই। ক্ষুধা লাগলেই শট এনজি হয় আমার (হাসি)। শুটিংয়ে আসার আগে বাসা থেকে অনেক খাবার আমি নিয়ে আসি। যখনই ক্ষুধা লাগে, ব্যাগ থেকে খাবার বের করে খাই। ক্ষুধা নিয়ে শুটিং করলে আমার শট একের পর এক এনজি হয়।’
সিফাত আরো বলেন,‘মায়া মসনদ এমনই ধারাবাহিক নাটক, যা দেখলে সবারই ভালো লাগবে। গল্পে এত টুইস্ট যে, দর্শক এক পর্ব দেখলে আর এক পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষা করবেন। আমি সবাইকে নাটকটি নিয়মিত দেখার জন্য বলব।’
তারকাবহুল ‘মায়া মসনদ’ ধারাবাহিক নাটকটি লিখেছেন অরিন্দম গুহ। নাটকটির পর্ব পরিচালক আতিকুর রহমান বেলাল ও দৃশ্য পরিচালনা করেছেন মাকসুদুল হক ইমু। ভিএফএক্স সুপারভাইজার তানিম শাহরিয়ার। আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিটে প্রতি সপ্তাহের রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার এনটিভিতে নাটকটি প্রচারিত হবে।
মসনদ, যার আভিধানিক অর্থ রাজসিংহাসন। কিন্তু অন্যভাবে দেখতে গেলে মসনদের অর্থ আধিপত্য, কর্তৃত্ব, প্রভাব এবং ক্ষমতা। আর এই অসীম ক্ষমতার লোভ থেকে যেমন আজকের যুগের মানুষ নিজেকে বিরত রাখতে অক্ষম তেমনই এই কাহিনীর পটভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ তথা মনুষ্যতর প্রাণীও আবদ্ধ এই মসনদের মায়ায়। হয়তো এই কারণেই যখন ঈষাণ বাংলার সুলতান আর্সলান তার রাজ্যের দায়িত্বভার ত্যাগ করতে প্রস্তুত হয় তখন তার জ্যেষ্ঠপুত্র আথিয়ার ছলে, বলে, কৌশলে অন্য দুই ভাই দাবির ও ফাহিমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় সেই মসনদ। কিন্তু সেই মসনদ হাতের মুঠোয় ধরে রাখতে গিয়ে চরম মানসিক দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।
একদিকে যখন আথিয়ারের ছোট ভাই ফাহিম ধীরে ধীরে প্রস্তুত হয় ঈষাণ বাংলার মসনদ ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য, তখন অন্যদিকে আথিয়ার জানতে পারে তার মসনদের অন্যতম শত্রু হয়ে দাঁড়াবে বীতস্পৃহ দাবিরের কন্যা। ভবিষ্যতের এই শত্রুর হাত থেকে মসনদ রক্ষা করতে দাবির ও তার স্ত্রীর ওপর চরম আঘাত হানতে প্রস্তুত হয় আথিয়ার। কিন্তু এক অদ্ভুত মায়াজালের টানে দাবিরের দুই কন্যা তাদের জন্মের পূর্বেই পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে যায় দুই ভিন্ন জীববলয়ে। অন্যদিকে, তত দিনে পৃথিবীর ঊর্ধ্ব বলয় মেঘমণ্ডলের সম্রাট আরাশ ও তাঁর দুই পুত্র আর্দা এবং কারাব এক সুদীর্ঘ যুদ্ধ শেষে ফিরে আসে তাদের রাজ্যে। আপাত শান্তি ও ভালোবাসার বাতাবরণে মোড়া এই মেঘমণ্ডলেও ধীরে ধীরে দেখা দেয় মসনদের মায়া তথা ক্ষমতালাভের অপার আকাঙ্ক্ষা। কারাব ও আর্দার দুই স্ত্রী তথা সম্রাট আরাশের স্ত্রীরাও জড়িয়ে পড়ে এই লোভের মায়াজালে।
এই পরিস্থিতির মাঝেই সম্রাট আরাশের বন্ধ্যা স্ত্রী হান এক কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে আসে মেঘমণ্ডলে। সবার জানতে পারে এই কন্যাকে ছোটরানি হান জন্ম দিয়েছে। মেঘমণ্ডলে আগমনের সাথে সাথেই এই কন্যা সবার মনে এক বিশেষ ভালোবাসার স্থান দখল করে নেয়। সম্রাট আরাশ এই কন্যার নাম রাখেন সুরাইয়া। জানা যায়, এই সুরাইয়া আসলে দাবিরের কন্যা। অন্যদিকে, দাবিরের অন্য এক কন্যা, লিয়া, জন্মগ্রহণ করে জাদুমণ্ডলে এবং বড় হয়ে ওঠে এক চপল, সুন্দরী মৎস্যকন্যা হিসেবে। মেঘমণ্ডলে বড় হয়ে ওঠা সুরাইয়া যখন যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেয়, তখন সম্রাট আরাশের চোখে সে হয়ে ওঠে মসনদের এক অন্যতম দাবিদার। মন থেকে না চাইলেও ভাগ্যের লিখন তাকে মসনদের যুদ্ধে টেনে নিয়ে আসে। আর সে যখন জানতে পারে তার আসল পরিচয়, তখন সুলতান আথিয়ারের বিরুদ্ধে সে তার পিতা-মাতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর হয়। কিন্তু পৃথিবীর বুকে নেমে এলে তার যাবতীয় ক্ষমতা তো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তখন কি তার পক্ষে সম্ভব হবে অসীম ক্ষমতার অধিকারী সুলতান আথিয়ার ও তার কুটিল স্ত্রী শীনাজের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া? কী হয় তারপর? সুরাইয়া কি সত্যিই নেমে আসে পৃথিবীর বুকে? সে কি কোনো দিন মুখোমুখি হতে পারে সুলতান আথিয়ারের? দাবির ও লিয়ার সঙ্গে কি কোনোদিন দেখা হয় সুরাইয়ার? মেঘমণ্ডল ও ঈষাণ বাংলার মসনদের মায়া কোন পথে নিয়ে যায় কাহিনীর অন্যান্য চরিত্রকে?