চলচ্চিত্রের ‘মা’ রেহানা জলির চিকিৎসা হবে
ফুসফুসে সংক্রমণ ও মেরুদণ্ডের হাড়ক্ষয়ের কারণে চলচ্চিত্রে আর কাজ করতে পারছেন না রেহানা জলি। পড়েছেন অর্থসংকটে তিনি। “চলচ্চিত্রের ‘মা’ রেহানা জলির চিকিৎসা বন্ধ” গত ২৫ অক্টোবর এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় এনটিভি অনলাইনে। চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তাও প্রার্থনা করেছিলেন তিনি।
চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
রেহানা জলি ছাড়াও আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রবীর মিত্র পেয়েছেন ২০ লাখ, নূতন পেয়েছেন ২০ লাখ, কুদ্দুস বয়াতি পেয়েছে ২০ লাখ টাকা অনুদান।
রেহানা জলি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আজ সকালে আমাকে ডেকে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেন তিনি। আপনাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী জানতে পেরেছেন আমার অসুস্থতার কথা। আমি সারা জীবন অভিনয় করে টাকা দিয়ে আমরা বোনগুলোকে মানুষ করেছি। আজ নিজের চিকিৎসার জন্য টাকা নেই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আবারও অভিনয় শুরু করতে পারি।’
রেহানা জলি আরো বলেন, ‘আমার ক্যানসার হয়নি। ফুসফুসে সংক্রমণ ও মেরুদণ্ডের হাড়ক্ষয়ের কারণে আমি অসুস্থ। যাঁরা ক্যানসার লিখছেন, তাঁরা আমার পরিবারের সঙ্গে কথা না বলে এবং না জেনেই নিউজ করেছেন। এটা কেউ করবেন না প্লিজ।’
প্রায় ৪০০ ছবিতে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন রেহানা জলি। চিকিৎসার খরচ আর চালাতে পারছেন না বলে হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। গত তিন মাস প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও আর নিতে পারছিলেন না এই শিল্পী। শুধু মায়ের চরিত্রে নয়, নায়িকা হিসেবেও কাজ করেছেন ৩৫টি ছবিতে। তবে বর্তমানে ফুসফুসে সংক্রমণ ও মেরুদণ্ডের হাড়ক্ষয়ের কারণে চলচ্চিত্রে আর কাজ করতে পারছেন না তিনি।
সংসারের ঘানি টানতে টানতে রেহানা জলি আর অর্থ সঞ্চয় করতে পারেননি। তাই এখন যখন অর্থের প্রয়োজন, তখন তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন। জলি বলেন, ‘আমরা বাবা মারা যান ’৮৩ সালে। আমরা চার বোন আর এক ভাই। আমি সবার বড়। ভাইটি ছোটবেলায় মারা গেছে। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই চার বোন আর মায়ের দায়িত্ব নিতে হয়েছে আমাকে। তার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছি সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে। বিয়েটা পর্যন্ত করার চিন্তা করতে পারিনি। যা টাকা কামিয়েছি, তার সব পরিবারের জন্যই খরচ করেছি। এখনো আমরা চার বোন একসঙ্গে এক বাড়িতে থাকি।’
১৪ বছর বয়সে ‘মা ও ছেলে’ ছবিতে মায়ের চরিত্র দিয়ে অভিনয় শুরু করেন রেহানা জলি। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির অভিনয়ের জন্য ১৯৮৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।