একতা চান আলমগীর, শাকিব চান নতুন যুগের সূচনা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের ২০১৯-২১ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৭ জুলাই। ঢাকা ক্লাবে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় প্রার্থীদের পরিচিতি সভা। সেখানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় কার্যনির্বাহী পরিষদের ৪১ প্রার্থীকে। এ সময় চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালক ও চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্রের সুদিন ফেরাতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেন নায়ক আলমগীর, নায়ক শাকিব খান নতুন যুগের সূচনা করার জন্য চান সহযোগিতা।
অনুষ্ঠানে আলমগীর বলেন, ‘আমরা নিজেরা নিজেদের টেনে নিচে নামিয়েছি। গত সাত বছর আমাদের প্রযোজক সমিতি নেই। মানুষের সঙ্গে কাজ করতে গেলে মনোমালিন্য হতেই পারে, তবে তাকে স্থায়ী রূপ দেওয়া যাবে না। নিজেদের মধ্যে বিভাজন শুধু ক্ষতিই করতে পারে, সফলতা দেবে না। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে আবারও চলচ্চিত্রের সুদিন ফেরাই। সবাই একসঙ্গে কাজ করি। আসন্ন নির্বাচনে ১৯টি পদের জন্য ৪১ জন নির্বাচন করছেন। আমি ৪১ জন প্রযোজকের কাছে ৪১টি চলচ্চিত্র চাই। এতে করে আমাদের ছবির সংখ্যা বাড়বে।’
শাকিব খান বলেন, ‘সবাই মিলে কাজ করলে অবশ্যই আমাদের চলচ্চিত্র আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। আমি আলমগীর স্যারের সঙ্গে এক মত, ৪১ জন প্রযোজক যদি প্রত্যেকে একটি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, তবে আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য শুভ। গত ঈদের পর থেকে দেখছি চারদিকে নতুন নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে। আমি চলচ্চিত্র নিয়ে আশাবাদী। আমরা তো আর চলচ্চিত্রের স্বর্ণালি যুগে ফিরে যেতে পারব না। আসুন, সবাই মিলে আমরা এমন যুগের সূচনা করি, যা আগামী দিনে মানুষের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রার্থীদের পরিচিতি সভা। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত এফবিসিসিআইর অঙ্গসংগঠন। মামলা ও নানা জটিলতার কারণে সাত বছর ধরে বন্ধ ছিল এই সমিতির নির্বাচন। ২৭ জুলাই এই সমিতির নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১৯টি নির্বাহী সদস্যপদের জন্য নির্বাচন করছেন ৪১ প্রার্থী। এর আগে নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ১৮ আগস্ট।
এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেল থাকছে না। নির্বাচন হবে দুই ধাপে। প্রথমে সাধারণ সদস্যরা ১৯ জন নির্বাহী সদস্যকে নির্বাচিত করবেন। এরপর ১৯ জন মিলে সম্পাদকীয় পদের জন্য ১০ জনকে নির্বাচিত করবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অর্থাৎ নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিরাজুল ইসলাম উকিল। সদস্য হিসেবে থাকবেন মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন (উপসচিব), মো. খাদেমুল ইসলাম (সহকারী প্রোগ্রামার)। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন আবদুর রহিম খান (যুগ্ম সচিব), সদস্য আব্দুছ সামাদ আল আজাদ (যুগ্ম সচিব), সৈয়দা নাহিদা হাবিবা (উপসচিব)।
২০১৬ সালে প্রযোজক নাসির হোসেনের করা রিটের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। পরপর তিনবার কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না—এফবিসিসিআইর অধীন সংগঠনের এমন নির্বাচনী রীতির খেলাপ করা হয়েছে মর্মে নাসির হোসেন বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত করেন।
এর আগে ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মামলার কারণে নির্বাচন সাময়িক বন্ধ করা হয়েছিল। এরপর সে বছর ২৯ অক্টোবর দুই দলই চলচ্চিত্রের স্বার্থে নাসিরুদ্দিন দিলুকে আহ্বায়ক করে ২২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।