এত বড় পুরস্কারের খবর পৌঁছাল না কাশ্মীরের শিশুটির কাছে!
ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার যখন ঘোষণা হচ্ছে, তালহা আরশাদ রেশির কাশ্মীরের অধিবাসীরা তখন বেঁচে থাকার সংগ্রামে ব্যস্ত। কাশ্মীরের বিস্ময়-শিশু তালহা এবার ৬৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে উর্দু ভাষার ছবিতে সেরা শিশু অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছে। ‘হামিদ’ সিনেমার জন্য সে এ পুরস্কার পায়। কিন্তু সিনেমার পরিচালক আইজাজ খান এখনো তালহার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। থমথমে কাশ্মীরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করাও যে চাট্টিখানি কথা নয়!
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া ও ওই অঞ্চলকে ভারতের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণার পরপরই কাশ্মীরের সঙ্গে বাইরের সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটানো এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পর যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আগাম সতর্কতাস্বরূপ হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাশ্মীর উপত্যকায় কড়া নজর রাখছে।
যদিও টানা পাঁচ দিন পর গতকাল জম্মু ও কাশ্মীরে অচলাবস্থার আংশিক অবসান হয়েছে। শুক্রবার সকালে ফোন পরিষেবা ও ইন্টারনেট আংশিকভাবে চালু করা হয়। জুমার নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে রাস্তাঘাটে চলাচল-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করা হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তির পর বার্তা সংস্থা পিটিআইকে পরিচালক আইজাজ বলেছেন, ‘এ আনন্দ প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। আমি শিহরিত। আমি এতটা আশাও করিনি। মহান স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তালহার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সব রকম চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছুতেই তা সম্ভব হচ্ছে না। কেন না ফোনের সব লাইন বন্ধ আছে। তালহার পরিবার পুরস্কারপ্রাপ্তি সম্পর্কে এখনো কিছু জানে না, এটি খুবই দুঃখজনক। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমি।’
উর্দু ভাষার ছবি ‘হামিদ’ আট বছরের এক শিশুর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে। ছবির গল্পে রয়েছে, কাশ্মীরি সেই শিশু তাঁর হারানো বাবাকে ফিরে পেতে আল্লাহর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চায়। সে ৭৮৬ নাম্বারে ডায়াল করে এবং সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের একজন জওয়ানের সঙ্গে কথা হয়। বালকটি সেই জওয়ানকেই স্রষ্টা হিসেবে বিশ্বাস করতে থাকে! সূত্র : ইন্ডিয়া টিভি