প্রযোজকের চাপে যৌন পেশায় অভিনেত্রী, অতঃপর…
রুপালি জগৎ নিয়ে সাধারণ জনগণের জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই। তারকাদের জীবনযাপনের খবর জানতেও তাঁদের আগ্রহের কমতি নেই। তবে অনেক কিছুই থেকে যায় অজানা, কিছু আবার জানা যায় ঘটনার অনেক পরে।
সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এবার উঠে এসেছে একজন অভিনেত্রীর করুণ জীবনের গল্প। জানা যায়, আশির দশকে ভারতের দক্ষিণী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নিসা নুর। ‘লায়ার দ্য গ্রেট,’ ‘টিক! টিক! টিক!,’ ‘কল্যানা আগাথিগাল’-এর মতো দর্শকপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু রুপালি জগতের ঝলকানি তাঁর জীবনের হতাশা দূর করতে পারেনি। এমনকি শেষ জীবনে তাঁর দিন কেটেছে ব্যাপক অর্থকষ্টে।
চলচ্চিত্রে কাজ করার সময়ে নিসা তাঁর অভিনয়ের দ্যুতি দিয়ে সবার মন জয় করে নেন। তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে সিনেমাপাড়ায়। বিষু, চন্দ্রশেখর, বালাচন্দনের মতো নামীদামি পরিচালকের সঙ্গে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করেছেন তিনি।
গুঞ্জন আছে, তাঁর অভিনয়শৈলীতে মুগ্ধ হয়ে কিংবদন্তি অভিনেতা রজনীকান্ত ও কামাল হোসেন তাঁর সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে সুদিন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি তাঁর জীবনে। তুমুল জনপ্রিয়তার অধ্যায় শেষে একসময় রুপালি পর্দা থেকে হারিয়ে যান নিসা। গুঞ্জন আছে, ক্যারিয়ারের একপর্যায়ে এক প্রযোজকের খপ্পরে পড়েন তিনি। ওই প্রযোজক তাঁকে যৌন পেশায় নামতে বাধ্য করেন। এই খবর জানাজানি হওয়ায় সিনেমাপাড়ার সবাই তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। ফলে কাজের অভাবে ভুগতে থাকেন নিসা। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে চলচ্চিত্র জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি।
বেকার নিসা একসময়ে প্রচণ্ড আর্থিক সংকটে ভুগতে থাকেন। দিনের পর দিন অনাহারে থাকতে হয়েছে তাঁকে। চরম এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে পাননি নিসা।
২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের একটি দরগার বাইরের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় নিসাকে। জীর্ণশীর্ণ নিসাকে এই সময় দেখে চেনার কোনো উপায় ছিল না। তিনি এতটাই দুর্বল ছিলেন যে একটি মশা তাড়ানোর মতো শক্তিও তাঁর ছিল না।
তবে তাঁকে চিনতে পেরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি দুরারোগ্য এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল মাত্র ৪৪ বছর বয়সে এইডসে মারা যান এই সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী।