কোনোদিন জানি আর হবে না দেখা : কুমার বিশ্বজিৎ
‘অনেক কথায় মুখর আমার দেখো, দেখো না শুধু হাসি শেষে নীরবতা’—এভাবেই গেয়েছিলেন বাংলা ব্যান্ড জগতের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। রুপালি গিটার ফেলে চলে যাওয়ার আভাস দিয়েছিলেন অনেক আগেই। তবে সেই সময়টা যেদিন এলো, অশ্রু গোপন করে রাখতে পারেননি কেউই।
গত বছরের ১৮ অক্টোবর অগণিত ভক্তকে কাঁদিয়ে না-ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা আইয়ুব বাচ্চু। প্রথম প্রয়াণ দিবসে তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতি তাই হাহাকার ছড়িয়েছে ভক্তদের মনে, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পথচলার সহযাত্রীদের মনেও।
প্রিয় বন্ধু, প্রয়াত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু রুপালি গিটার ফেলে অসীমের পথে যাত্রা করেছেন এক বছর হলো। সেই হাহাকার ছড়াল আরেক কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের বুকে। বললেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের হয়তো দেখাদেখি বন্ধ। কথা হচ্ছে না। একসঙ্গে দীর্ঘ আলাপের আড্ডা নেই। তবু সে আমার সঙ্গেই আছে। বন্ধুহীন কাটল এক বছর। খুবই বেদনাদায়ক।’
ফোন থেকে এখনো আইয়ুব বাচ্চুর নাম্বার ডিলিট করেননি কুমার বিশ্বজিৎ।
এনটিভি অনলাইনকে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমি তো বিশ্বাস করতে চাই না যে আমার বন্ধু নেই, আর কোনো দিনই দেখা হবে না। হয়তো সে আছে আমার আশপাশেই, কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে না। কিন্তু সে আছে। থাকতেই হবে। এ কারণে খুব যত্ন করে তাঁর সব স্মৃতি যেমন আমি আমার মনের ঝুড়িতে জমিয়ে রেখেছি, ঠিক তেমনি ফোন নাম্বারটাও ডিলিট করিনি। যদিও কোনোদিন আর কল করা হয়নি। তবু থাকুক না নাম্বারটা!’
আইয়ুব বাচ্চুর চলে যাওয়া এখনো মেনে নিতে পারেন না কুমার বিশ্বজিৎ। বললেন, ‘এই দুঃখ ভুলতে পারিনি। ভোলা যায় না।’ বাচ্চু নামে ফোন নাম্বার সেলফোনে সেভ করে রেখেছেন।
কুমার বিশ্বজিৎ জানেন, কোনোদিন আর তাঁর সঙ্গে দেখা হবে না। তবু তাঁর বিশ্বাস, তাঁর আশপাশেই আছেন প্রিয় বন্ধু, প্রিয় সহযোদ্ধা।
আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যু সংগীতের জন্য বিশাল ক্ষতি বলে মনে করেন কুমার বিশ্বজিৎ। বললেন, ‘সবাইকে চলে যেতে হবে একদিন। কিন্তু খুব অসময়ে বাচ্চু চলে গেল। অন্তরের অন্তস্তল থেকে বাচ্চুর জন্য আমার শুভকামনা। যেখানেই থাকুক সে ভালো থাকুক, সুন্দর থাকুক।’
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। আইয়ুব বাচ্চুর ঝুলিতে রয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। এসবের মধ্যে ‘রুপালি গিটার’, ‘ফেরারি মন’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘উড়াল দেব আকাশে’, ‘একচালা টিনের ঘর’, ‘সে তারাভরা রাতে’, ‘তিন পুরুষ’ ইত্যাদি।