রক্তস্বল্পতা কেন হয়?
রক্তস্বল্পতা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। রক্তস্বল্পতা কেন হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১২৩তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মুনিম আহমেদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একজন মানুষের রক্তস্বল্পতা হয় কেন? শিশু, নারী, পুরুষ কাদের বেলায় বেশি দেখতে পান?
উত্তর : রক্তস্বল্পতা আসলে অনেকগুলো কারণের ওপর নির্ভর করে। এক, রক্ত তৈরির যে উপাদানগুলো প্রয়োজন, সেগুলোর যদি কোনো কারণে ঘাটতি ঘটে, সে ক্ষেত্রে তার রক্তস্বল্পতা হবে। দুই, উপাদান ঠিক রয়েছে, ঘাটতি নেই। তবে তার হয়তো কোনো একটা গুরুতর দুর্ঘটনায় রক্তপাত হয়ে গেল। শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে গেল অনেক পরিমাণে, যেটা উৎপাদন করে পূরণ করতে সময়ের প্রয়োজন। তখন তার রক্তস্বল্পতা হবে। আর তিন, খাবারের রক্ত উপাদানের ঘাটতি নেই, প্রক্রিয়াও ঠিক রয়েছে, কিন্তু তার অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ জেনেটিক কোনো বিষয়ের কারণে তার হিমোগ্লোবিনটা ত্রুটি পূর্ণ। সে ক্ষেত্রে তার হিমোগ্লোবিন শরীরের মধ্যে দ্রুত ভেঙে যায়। আমরা জানি, আমাদের লাল লোহিত রক্ত কণিকা ১২০ দিন বাঁচে। কোনো কারণে ১২০ দিনের পরিবর্তে যদি এটা ৩০ দিন/ ৪০ দিন নেমে আসে, সে ক্ষেত্রে টার্নওভার অনেক দ্রুত হয়। এই দ্রুত বদলানোটা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর শরীর আর নিতে পারে না। এতে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়।
প্রশ্ন : কোনো রোগের কারণে কি রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া হতে পারে? বিশেষ করে শিশুদের বেলায় কৃমির সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে কি?
উত্তর : শিশুদের ক্ষেত্রে যেটি বেশি হয়, সেটি হলো উপাদান ঘাটতিজনিত সমস্যা। শিশুদের খাবারের মধ্যে আয়রনের প্রয়োজন। এটি প্রয়োজন রক্ত তৈরিতে। ভিটামিন বি১২-এর খুব প্রয়োজন। ফলিক এসিডের খুব প্রয়োজন। এগুলো যদি ঘাটতিগত ত্রুটি দেখা দেয়, তাহলে ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা খুব বেশি দেখা দেয়।
আপনি যেটি বললেন, কৃমি, এটি কী করে? রক্ত খেয়ে ফেলতে থাকে। শরীরে পরিপাকতন্ত্রের ভেতরে সে রক্ত ধীরে ধীরে খেতে থাকে। কৃমি যে রক্ত খেয়ে ফেলছে রিসাইকাইকেল করে, সে আয়রনকে ব্যবহার করতে পারছে না। কাজেই শিশুদের জন্য দুটো বিষয়ই সমানভাবে প্রযোজ্য তীব্র রক্তস্বল্পতার জন্য।