ফুসফুস ক্যানসারের চিকিৎসায় করণীয়
ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত পুরুষদের বেশি হয়। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে রোগ অনেকটা সারিয়ে তোলা যায়। আর অগ্রবর্তী পর্যায়ে এলে রোগ নিরাময় করা না গেলেও রোগীর শারীরিক কষ্ট কিছুটা দূর করা যায়।
ফুসফুসের ক্যানসারের চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২০১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ইকবাল হোসেন মাহমুদ। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিভাগে সিনিয়র পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কী ধরনের লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাবে?
উত্তর : কতগুলো বিষয় আমরা মেলানোর চেষ্টা করি। একটি হলো বয়স, মধ্য বয়সীদের হবে। বাংলাদেশে যক্ষ্মা তরুণদের হয়, বৃদ্ধ বয়সে যক্ষ্মা হয় না। বৃদ্ধদের যদি ফুসফুসে শ্যাডো পাই, সহজে যক্ষ্মার চিন্তা করি না। তো বয়স একটি বিষয়। ধূমপানের ইতিহাস একটি বিষয়। ফুসফুসের একটি পরীক্ষা করি, একটি বুকের এক্স-রে করি, পারিবারিক ইতিহাস দেখি- পরিবারে আরো কারো রয়েছে কি না জানি। প্রথমে কিন্তু সন্দেহ তৈরি হয়ে যায়। আমরা ক্যানসারের লাইনেই তখন এগোতে থাকি। যদি ছোট একটি শ্যাডো পাই আমরা এফএনএসি র জন্য অপেক্ষা করি। আমি দেখি যে ছড়িয়ে গেছে কি না শরীরের কোথাও। যদি না ছড়িয়ে যায়, যদি প্রাথমিক অবস্থা হয়, সার্জনের কাছে গিয়ে আমরা ফেলে দিতে পারি। ফেলে দিলে এরপর আমরা ক্যামোথেরাপি দেব, রেডিওথেরাপি দেব। কোন ধরনের ক্যানসার হচ্ছে, সেই ধরন অনুযায়ী দেখি চিকিৎসাটা রেডিওথেরাপি দিয়ে দেব, না কি ক্যামোথেরাপি দিয়ে দেব।
আমাদের কাছে যখন আসে, এত দুঃখ লাগে আমার দেখা যায় যে গলায় হয়তো গ্রন্থি হয়ে গেছে। এদিকে মস্তিষ্কেও এটি ছড়িয়ে পড়ছে। সে উল্টোপাল্টা কথা বলছে। রোগীর অন্য কোনো লক্ষণ নেই, রোগী উল্টো পাল্টা কথা বলছে। কথার ভারসাম্য নেই। আপনি যদি এমআরআই করেন মস্তিষ্কের, তখন দেখবেন, মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে পড়েছে। তখন আমরা প্রাথমিক জায়গাটা খোঁজার চেষ্টা করি। মস্তিষ্কে যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন আমরা আগে এক্স-রে করার চেষ্টা করি। তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্যানসারের চিকিৎসা আমি দেই না। ক্যানসারের চিকিৎসা দিলে চুল পড়ে যাবে। বমি বমি ভাব হবে বা খাওয়ার রুচি চলে যাবে। তখন লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া ছাড়া কোনো রাস্তা নেই। যত দিন তিনি বেঁচে থাকবেন, তত দিন যেন আরামে থাকে। কারণ, ফুসফুসের ক্যানসারে মারাত্মক ব্যথা হয়। তখন রেডিওথেরাপি দিয়ে আমরা ব্যথাটা দূর করার চেষ্টা করি। এগুলো কোনোটাই নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা নয়। এগুলো রোগীকে আরাম দেওয়ার জন্য। অন্তত একটু শান্তিতে তার শেষ জীবনটা কাটিয়ে যাক।