ত্বকে পড়ছে বার্ধক্যের ছাপ, কী দেখে বোঝা যাবে?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকও বুড়িয়ে যেতে থাকে। ত্বকে আসে বার্ধক্যের ছাপ। কী দেখলে বুঝবেন ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ছে?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২৬৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন। বর্তমানে তিনি শিওর সেল-এর ডার্মাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ত্বকের তারুণ্যের বিষয়টি আপনারা ব্যাখ্যা করেন কীভাবে?
উত্তর : আসলেই আমরা একটি সুন্দর বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। ২০১৮ যেমন শেষ হয়ে যাচ্ছে, আসছে নতুন বছর, নতুন সাল ২০১৯, তেমন করে কিন্তু আমাদের জীবন থেকেও একটি করে বছর চলে যাচ্ছে। বয়স বাড়ার এই যে স্বাভাবিক নিয়ম, এটি চলছে আমাদের ত্বকে, কোষে, প্রতিটি অঙ্গে। এতগুলো অঙ্গে হলেও বয়স বৃদ্ধির ছাপ দৃশ্যমান হয় আমাদের ত্বকে। এই যে চিহ্নগুলো, এগুলোকে কিছুটা কমিয়ে আনা, একটু ধীরগতির করা, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো একেবারেই সরিয়ে ফেলা, এটি হচ্ছে, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখা।
প্রশ্ন : ত্বকের কোন কোন জায়গায় বয়স বৃদ্ধির লক্ষণগুলো চোখে পড়ে?
উত্তর : অনেকে মনে করেন, বয়স বৃদ্ধির ছাপ শুধু মুখেই আসে। ত্বক যেহেতু আমাদের শরীরকে আবৃত করে রাখে, তাই অন্যান্য জায়গায়ও এর প্রভাব পড়ে। আমরা যখন অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে অ্যান্টিএইজিংয়ের ওপরে ওয়ার্কশপ করেছি, সেখানে আমাদের বিভিন্ন বয়সের হাতের ছবি দিয়ে শেখানো হয়েছে। ১০ বছর, ২০ বছর, ৩০, ৪০, ৫০, ৬০ বছরের হাত দেখানো হয়েছে। প্রতি ১০ বছরের লক্ষণগুলো কীভাবে হাতে আসছে, সেটি দেখেছি। হাতে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে।
আমি নখ থেকে শুরু করছি। নখের রং পরিবর্তন, নখ ভেঙে যাওয়া, নখ দুর্বল হয়ে যাওয়া, নখে নানা রকম রোগ—এগুলো বয়স বাড়ার লক্ষণ। এরপর হাতের তালুতে আসছি। হাতের তালু কুঁচকে যাওয়া। হাতের তালু মোটা হয়ে যায় বা খসখসে হয়ে যায়। হাতের আর্দ্রতা কমে যায়। সাধারণত আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গে অয়েল গ্ল্যান্ড, যাকে আমরা ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার গ্ল্যান্ড বলি, সেটি কিন্তু হাতে একটু কম থাকে। আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তো কোলাজেন কমতে থাকে। এতে দেখা যায়, নানা ধরনের বয়সজনিত দাগ, হলুদ দাগ, বাদামি দাগ এবং হাতের চামড়া কুঁচকে যাওয়া, বলিরেখা পড়া ইত্যাদি হয়।
প্রশ্ন : হাত ছাড়া আর কোথায় কোথায় লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়?
উত্তর : হাতের পড়ে আমি আসছি গলার দিকে। আমরা মুখের ত্বকের যত্ন নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকি। আমরা মুখে যেই পণ্য ব্যবহার করছি, সেটি একটু বাড়িয়ে যদি গলায় ব্যবহার করি বা হাতে ব্যবহার করি, যেই যত্নটা মুখে নিচ্ছি, সেটি যদি গলায় বা হাতে করি, তাহলে এই সমস্যাগুলো কিন্তু আসছে না।
এখন আমি একটু লক্ষণগুলো বলতে চাই, গলায় কী ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। প্রথমে তো দেখা যায় রঙের সমস্যা। গলার রংটা একটু মুখের থেকে আলাদা। হঠাৎ করে ওজন বাড়ার কারণে গলার চামড়া মোটা হয়ে যাচ্ছে। একে আমরা ফ্যাট নেক বলি। ওজন কমানোর জন্য অনেকে ক্র্যাশ ডায়েট করছে। তখন গলার চামড়া ঝুলে যাচ্ছে। ৩০ থেকে চল্লিশের মাঝে গলায় একটি লক্ষণ দেখা দেয়। একে আমরা নেকলেস সাইন বলি। নেকলেস পরলে যেমন একটি চিকন দাগ দেখা যায়, তেমনি। আরেকটু যখন বয়স বাড়ে, তখন একটি দাগ হয়, কয়েকটি দাগ দেখা দেয়।
প্রশ্ন : চেহারায় বয়সের ছাপের বিষয়ে একটু বলবেন কী?
উত্তর : চুলে সাধারণত, চুল পেকে যাওয়া, চুল ঝরে যাওয়া, ভ্রুর ঘনত্ব কমে যাওয়া, কপালে বলিরেখা দেখা দেওয়া, হাসলে চোখের পাশে ভাঁজ, হাসলে নাকের পাশে দাগ পড়া এগুলো হয়। এগুলো হলো বয়স বাড়ার লক্ষণ। এসব ক্ষেত্রে আমরা মুখের ব্যায়াম নিয়মিত করতে পারি।