গ্লুকোমা কী, কীভাবে হয়?
গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। একে নীরব ঘাতকও বলা হয়। গ্লুকোমা কী, কীভাবে হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩৯৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. জাকিয়া সুলতানা।
ডা. জাকিয়া সুলতানা বর্তমানে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কয়েক দিন হলো শেষ হয়েছে গ্লুকোমা সপ্তাহ। এবারের গ্লুকোমা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য কী ছিল?
উত্তর : কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে গ্লুকোমা সপ্তাহ। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ব এই গ্লুকোমা সপ্তাহ পালন করেছে। সেই উপলক্ষে আমরা বাংলাদেশেও অনেক আয়োজন করেছি। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘গ্রিন গ্লো, গেট ইউর আইস টেস্টেট ফর গ্লুকোমা’। এর মানে হঠাৎ করে হয়তো বোঝা যায় না। আসলে রাস্তা দিয়ে চলার সময় সবুজ বাতি দেখলে আমরা কী মনে করি? ট্রাফিকের সবুজ বাতি মানে আমরা রাস্তা পার হবো। আসলে প্রতিপাদ্যটির মানে হলো, আপনার সামনে পথ খোলা, আপনি যান। গ্লুকোমার জন্য চোখ পরীক্ষা করে আসুন। দেখুন, আপনার চোখটা গ্লুকোমা মুক্ত কি না।
আপনি এটুকু জেনে নিন যে আপনার গ্লুকোমা রয়েছে কি না। যদি থাকে, তারপর তো অন্য বিষয় চলে আসবে।
প্রশ্ন : গ্লুকোমা কী, এটি কেন হয়?
উত্তর : গ্লুকোমা হলো অন্ধত্বের তৃতীয় বৃহত্তম কারণ। গ্লুকোমায় যে অন্ধটা হয়, সেই দৃষ্টিটা আর ফিরে আসে না। আপনি জানতে চাচ্ছেন, গ্লুকোমা কীভাবে হয়? ধরুন, আমাদের চোখ ফুটবলের মতো গোল একটি জিনিস। এর মধ্যে একপাশ থেকে তৈরি হচ্ছে পানি, সেই পানিটা সারা চোখেই সঞ্চালন হচ্ছে। আরেকটি পথ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনো কারণে যদি বেশি তৈরি হয় অথবা কোনো কারণে বের হওয়ার পথে যদি বাধা পায়, তখন সেই পানিটা চোখের মধ্যে জমা হতে থাকে। জমা হয়ে চোখের যে বাইরে দেয়ালটা, সেই দেয়ালের যেগুলো দুর্বল জায়গা, সেখানে চাপ তৈরি করে।
চোখের ঠিক পেছনে একটি স্নায়ু রয়েছে। এটি সবচেয়ে দুর্বল জায়গা। অতি মূল্যবান স্নায়ু। এটি হলো অপটিক স্নায়ু। আসলে যেটি আমরা দৃষ্টিতে দেখি, এর সেনসেশনটা ওই স্নায়ু দিয়ে আমাদের মস্তিষ্কে চলে যায়। মস্তিষ্ককে বলে, বিষয়টি দেখো। তখন চোখ অনুভব করে আমি এই জিনিসটি দেখছি। এখন গ্লুকোমার কারণে চোখে যখন প্রেশার বেড়ে যায়, এই স্নায়ুতে গিয়ে চাপ তৈরি করে। চাপ পড়তে পড়তে একটি সময় স্নায়ু তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। শুরুতে চাপটা এমন থাকে যে ওই চাপটা সরিয়ে ফেললে স্নায়ুটা আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারে। কিন্তু একটি সময় নিয়মিত যখন চাপটা পড়ে, তখন একটি সময় আর ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। তখন গ্লুকোমার কারণে চোখে ক্ষতি হতে পারে।