ঘাড়ব্যথা কেন হচ্ছে, কী পরীক্ষা করে বুঝবেন?
জীবনের কোনো না কোনো সময় ঘাড় ব্যথায় ভোগেননি, এ রকম মানুষ হয়তো পাওয়া মুশকিল। এই ব্যথা কখনো কখনো জটিল কারণের জন্য হয়। তবে ঘাড়ব্যথা কোন কারণে হচ্ছে সেটি বোঝার জন্য কী পরীক্ষা করা হয়?
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪৪৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. নুরুজ্জামান খান। বর্তমানে তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : চিকিৎসকের কাছে গেলে আপনারা কী করে থাকেন?
উত্তর : যখন রোগী আমাদের কাছে আসে, আমরা রোগীর ইতিহাস নিই। তার শারীরিক পরীক্ষা করি। আমরা নির্ণয় করার চেষ্টা করি, তার সমস্যাটা কোথায়। ঘাড়ের কোথায় সমস্যা হয়েছে? অনেক সময় দেখা যায় এক পাশে ব্যথা হয়েছে, আবার অনেক সময় দেখা যায় দুই পাশেই ব্যথা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, তার হাতের থেকে পায়ের সমস্যাটা বেশি। হাতেরটা এড়িয়ে যাচ্ছে বা বলছে না। তবে আমরা যখন পরীক্ষা- নিরীক্ষা করি, দেখা যায় হাতেও তার সমস্যা রয়েছে। আমরা বুঝতে পারি তার ঘাড়ে সমস্যা। তখন আমরা অবশ্যই সেই সম্পর্কিত পরীক্ষা- নিরীক্ষা করি। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিতভাবে আমরা একটি এক্স-রে দেই। এটি করলেই আমরা অনেক কিছু বুঝতে পারি। এরপর কিছু রক্তের পরীক্ষাও দেওয়া হয়। তবে সবচেয়ে জরুরি যে পরীক্ষাটা আমাদের লাগে, সেটি হলো, এমআরআই পরীক্ষা। এর মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু বের করতে পারি। যদি মেরুদণ্ডের ডিস্ক প্রোলাপস হয়ে থাকে, এর এমআরআই খুব সুন্দর বোঝা যায়। যদি তার স্নায়ুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ডে চাপ থাকে, তাহলে আমরা বুঝতে পারি। পাশাপাশি যে স্নায়ুটা বের হয়ে হাতের দিকে যায়, সেটাতেও যদি চাপ খেয়ে থাকে, এটাতেও আমরা বুঝতে পারি।
অনেক সময় আমরা এমসিএস বা ইএমজি জাতীয় পরীক্ষা দেই। কারণ আপনি জানেন, ঘাড়ের এই সমস্যাগুলো সঙ্গে কিছু মেডিকেল সম্পর্কিত সমস্যাও রয়েছে। যেমন ধরুন, ট্রান্সভার্ট মায়ালাইটিস হতে পারে। একটি ভাইরাল ইনফেকশন হওয়ার পর দেখা গেল তার হাত পায়ে চলে গেছে। এটাতে কোনো সার্জারির প্রয়োজন নেই। আবার অনেক সময় গুলেনবেরি সিনড্রম বা এ ধরনের কিছু সমস্যা দেখা দেয়। মটো নিউরন ডিজিজ নামে কিছু অসুখ রয়েছে, এগুলোতে সার্জারির কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু কঠিন একটি অসুখ মানুষের হয়, যেখানে চার হাত-পা দুর্বল হয়ে যায়। প্যারালাইসিস হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে। এই ক্ষেত্রে ইএমজি বা এসইএস করলে আমরা অনেক কিছু নির্ণয় করতে পারি। অনেক সময় দেখা যায় সিটিস্ক্যান পর্যন্ত লাগে। যেমন ওপিএল এল হওয়া, ওখানে যে পর্দা রয়েছে, সেটি যদি ক্যালসিফাইড হয়ে যায়, হাড়ে রূপান্তর হয়ে যায়, এ ক্ষেত্রে এমআরআইতে বোঝা যাবে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের সিটিস্ক্যান করে বুঝতে হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা করতে হয়, এই সমস্যাগুলোকে নির্ণয় করার জন্য। এই সমস্যাটা পুরোপুরি বুঝেই আমরা চিকিৎসা পরিকল্পনা নিতে পারি।