ডায়াবেটিক ফুট আলসার কী, কেন হয়?
দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস থাকলে এবং সেটি অনিয়ন্ত্রিত থাকলে ডায়াবেটিক ফুট আলসার তৈরি হতে পারে। মূলত ডায়াবেটিক ফুট আলসার কী, কেন হয়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৬৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আবদুল্লাহ আল গাদ্দাফী রানা। বর্তমানে তিনি ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুরের অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ফুট কেয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ডায়াবেটিক ফুট আলসারকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
উত্তর : আসলে সহজে যদি বলতে চাই, ডায়াবেটিসের কারণে পায়ের যে ক্ষত তৈরি হয়, তাকেই ডায়াবেটিক ফুট আলসার বলে। মেডিকেলের ভাষায় যদি আরেকটু ভালো করে বলতে চাই, তাহলে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে পায়ের রক্ত সরবরাহ ও অনুভূতি শক্তি কমে যায়। এতে পায়ে আঘাত লেগে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। একেই ডায়াবেটিক ফুট বলা হয়।
ডায়াবেটিক ফুট আলসারের ডায়াবেটিসের কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, যেখানে পায়ের অবশ ভাবটা থাকবে, অনুভূতি শক্তিটা কমে যাবে। এরপর আস্তে আস্তে আঘাতের কারণে ডায়াবেটিক ফুট আলসার তৈরি হবে। মানে ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষত তৈরি হবে।
প্রশ্ন : ধারাবাহিকতাটা কীভাবে হতে পারে?
উত্তর : নিয়ন্ত্রিত থাকার পরও যদি ১০ বছরের বেশি কারো ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে আস্তে আস্তে তার পায়ের ডায়াবেটিক পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা পায়ের অনুভূতি শক্তি কমে যায়। অনুভূতি শক্তি কমে যাওয়ার কারণে পায়ের চামড়া শক্ত হয়ে যায়। একে আমরা মেডিকেলের ভাষায় ক্যালাস বলি।
যখন সে আস্তে আস্তে খালি পায়ে হাঁটতে শুরু করে অথবা কোনো ধরনের কোনো আঘাত ওই ক্যালাসের ওপর লাগে, তখন ক্যালাসের চামড়াটা আস্তে আস্তে ফেটে গিয়ে পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। প্রথম দিকে যদি না খেয়াল করে রোগী, একদিন বা দুদিন পরে যদি সে হাঁটাহাঁটি শুরু করে, তাহলে দেখা যায়, সেখান থেকে বড় ধরনের ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এটা রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
প্রশ্ন : ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের যত্ন না নিলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : যদি রোগী খেয়াল না করে, তখন রোগীদের জন্য খুব ক্ষতিকর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি পায়ের নিচের ক্ষতিকর অংশটাও কেটে ফেলতে হয়। অনেক সময় পায়ের ওপরের অংশটুকুও কেটে ফেলতে হয়। এ জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে, প্রতিদিন আয়নার সামনে নিজের মুখটা যখন দেখবে, পা-কেও যেন সে নিয়মিত চেক করে।