বইপোকা
বইয়ের সন্ধানে দীপনপুরে
বইয়ের দোকানে বই কিনতে গিয়ে যদি পাওয়া যায় নিরিবিলি পরিবেশে বইয়ের পাতা উল্টেপাল্টে দেখার সুযোগ আর যদি সঙ্গে থাকে ধোঁয়া ওঠা চা বা কফি তাহলে তো কথাই নেই। বইপোকাদের মন তো সেখানেই ছুটে যাবে। এমনই এক বইয়ের দোকান রয়েছে এলিফেন্ট রোডে, নাম 'দীপনপুর'।
জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী প্রয়াত ফয়সাল আরেফীন দীপনের স্মৃতি ও চেতনাকে ধরে রাখতে এ বুক শপ ক্যাফের যাত্রা। অল্প দিনের মধ্যেই পাঠকদের মনে স্থান করে নিয়েছে 'দীপনপুর'। এখানে জাগৃতির বই যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন প্রকাশনীর বইও।
বই ছাড়াও দোকানটিতে রয়েছে ‘দীপনতলা’ নামে একটি অনুষ্ঠানস্থল। চাইলে যে কেউ এখানে সাহিত্য, কবিতা পাঠ, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন বা জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে পারে। সপ্তাহে দুদিন (শুক্র ও শনিবার) দীপনতলায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি থাকে শিশুদের জন্য গল্প বলার আসর এবং বরেণ্য ব্যক্তিদের সাথে শিশুদের মতবিনিময়।
রয়েছে ‘ক্যাফে দীপাঞ্জলি’। এখানে বই পড়া ও দেখার পাশাপাশি পাওয়া যায় চা, কফি ও ফ্রেস জুস। এ ছাড়া পাওয়া যায় হাল্কা নাস্তা।
শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে স্বপ্নরাজ্য ‘দীপান্তর’। শিশুরা এ কর্নারে বই পড়তে পারবে, ছবিও আঁকতে পারবে। পাশাপাশি খেলতেও পারবে।
এ ছাড়া বয়স্ক ব্যক্তিদের নিরিবিলিতে বসে বই পড়ার জন্য রয়েছে সিনিয়র সিটিজেন কর্নার। আছে দুটি প্রার্থনা কক্ষ।
কথা হয় দীপনপুরের স্বত্বাধিকারী ও প্রধান সমন্বয়ক প্রয়াত দীপনের স্ত্রী ডক্টর রাজিয়া রহমান জলির সঙ্গে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই যদি এমন পরিবেশে শিশুদের বই পড়ানো যায়, তবে বই পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহ গড়ে উঠবে। দীপন সব সময় বিশ্বাস করত বইয়ের মধ্য দিয়ে সমাজের পরিবর্তন করা সম্ভব। ওর (দীপন) স্মৃতি ও চেতনাকে ধরে রাখতে এ দীপনপুর। দীপনের স্মৃতি রক্ষার্থে পাঠকদের দীপনপুরে আসতে হবে। খুনিদের দেখিয়ে দিতে হবে, দীপন বেঁচে আছে পাঠকদের মাঝে।’
দীপনপুরের নিয়মিত পাঠক আল-আমিন শেখ বলেন, ‘বই পড়ার মনোরম পরিবেশ আছে এখানে। হালকা সুরে মগ্ন থেকে পছন্দের বইটির সাথে কাটিয়ে দেওয়া যায় বেশ কিছুটা সময়। পড়া, খাওয়া এবং অন্য পাঠকদের সাথে আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে আমার কাছে অসাধারণ একটা জায়গা দীপনপুর।’
দীপনপুরে প্রয়োজনীয় বইটি খুঁজে না পেলে অর্ডার দিলে, নির্দিষ্ট সময়ে পাঠকের ঠিকানায় বই পৌঁছে দেয় দীপনপুরের কর্মীরা। অনলাইনেও অর্ডারের সুবিধা আছে এখানে।
বিভিন্ন প্রকাশনীর নতুন বইয়ের পাশাপাশি পুরনো বইয়ের মজুদও রয়েছে দীপনপুরে। সব মিলিয়ে এটি বইপোকাদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট দোকান।