পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘বিউটি লাচ্ছি’
৫২ বাজার ৫৩ গলির প্রাচীন শহর ঢাকা। ৪০০ বছরের পুরোনা এ শহরের অলিগলিতে বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে নামিদামি নানা হোটেল-রেস্তোরাঁ। এসব খাবারের দোকানের কোনো কোনোটির বয়স প্রায় শত বছর। এমনই একটি পুরোনা ঢাকার পুরোনো প্রতিষ্ঠান ‘বিউটি লাচ্ছি’। যারা আজও সুনামের সঙ্গে ধরে রেখেছে তাদের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য।বন্ধুরা আপনি চাইলে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন ঐতিহ্যবাহী ‘বিউটি লাচ্ছি’তে। স্বাদ নিতে পারবেন ঐতিহ্যবাহী লাচ্ছির। আর খরচের কথা ভাবছেন তা আপনার নাগালের মাঝে।
শুরুর কথা
সময়টা ১৯২২ সাল। শুরু করেছিলেন লেবুর শরবত দিয়ে। পরে যুক্ত করেন লাচ্ছি। এরপর ফালুদা। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আবদুল আজিজকে। দোকানের নাম রাখেন বিউটি লাচ্ছি অ্যান্ড ফালুদা। এক নামে এখন সবাই চেনে এই দোকান। আবদুল আজিজের হাত ধরে ব্যবসায় হাল ধরেন ছেলে গফফার মিয়া। ১৫ বছর আগে মারা যান গফফার মিয়া। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে দোকানের হাল ধরেছেন ছেলে জাবেদ হোসেন। বিউটি লাচ্ছির এই দোকান পুরান ঢাকার জনসন রোডে। তার পাশেই ঢাকার আদালতপাড়া। রোজ সকাল ৯টায় দোকান খোলে। বন্ধ হয় রাত ১২টায়। সব সময় ভিড় লেগেই থাকে।
লাচ্ছি কিংবা ফালুদা তৈরির উপকরণে কোনো কৃত্রিম রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার করা হয় না এখানে। এ কারণে বিউটির লাচ্ছি-ফালুদার এত নামডাক। ফালুদা তৈরি করা হয় নুডলস, সাগুদানা, কলা, দুধের মালাই, খোরমা খেজুর, কিশমিশ, আনার, আপেল, চেরি ফল, চিনির শিরা ও মধু দিয়ে। বাজারের নুডলস নয়, নিজেদের তৈরি করা নুডলস ব্যবহার করেন ফালুদা তৈরিতে।
এখানে স্পেশাল লাচ্ছি ৪০ টাকা, স্পেশাল বিট লবণ লাচ্ছি ৪০ টাকা, নরমাল লাচ্ছি ৩০ টাকা, নরমাল বিট লবণ লাচ্ছি ৩০ টাকা, ফালুদা স্পেশাল ৮০ টাকা, ফালুদা নরমাল ৬০ টাকা ও লেবুর শরবত ২০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া নানা ধরনের ফলের মজাদার ও পুষ্টিকর ফলের জুস পাওয়া যায়। রায়সাহেব বাজারের বিউটি লাচ্ছির শাখা রয়েছে দুটি, একটি নাজিরাবাজারে, অন্যটি লালবাগে। সপ্তাহে সাত দিনই খোলা থাকে শাখাগুলো; শুধু শুক্রবার সকাল থেকে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত বন্ধ থাকে। রায়সাহেব বাজার থেকে সদরঘাট যাওয়ার পথে হাতের ডান পাশে জনসন রোডে রয়েছে মূল শাখাটি।