২০ টাকায় কলাভর্তা
একটি ছোট ভ্যান, তার ওপর সাজানো নানা রকম জিনিসপত্র, সিজনাল ফল। যেমন ধরুন কাঁচাকলা, জলপাই, পেয়ারা, বরই, তেঁতুল, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, চিনি, কাসন্দির বোতলসহ আরো অনেক কিছু।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকলে এ রকম চার-পাঁচটা ভ্যান আপনার চোখে পড়বে। কাঁচাকলা দেখে দূর থেকে সবজির ভ্যান মনে হলেও যতই এগোবেন, টুং টাং একটা শব্দ কানে আসবে। এই ভ্যানটা ভর্তা বিক্রির ভ্যান। এতে করে বিক্রি করা হয় নানা ধরনের ভর্তা। আপনি যেটা খেতে চাইবেন, আপনার সামনে দাঁড়িয়ে বানিয়ে দেওয়া হবে। আর ওই টুং টাং শব্দটা ভর্তা বানানোর হামানদিস্তার।
নানান ধরনের ভর্তার মধ্যে কলাভর্তাই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। একটি কাঁচাকলা, কয়েকটা তেঁতুল/ জলপাই/ বরই, একটু ধনেপাতা, কাঁচামরিচ একসঙ্গে হামানদিস্তায় দিয়ে ভালো করে ছেঁচে মিহি বানিয়ে, শেষে কাসুন্দি মিশিয়ে পলিথিনে করে বিক্রি করা হয়। আপনি চাইলে ইচ্ছামতো ঝাল বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। অন্য সবকিছুর ভর্তা, বানানো বা মাখানো সব জায়গায় সচরাচর পেলেও কলাভর্তা এখানকার নিজস্ব সৃষ্টি। জানা যায় এখানকার একজন ভর্তা বিক্রেতা কোনো একদিন ভুল করে অন্য ভর্তার মধ্যে কাঁচাকলা দিয়ে দিয়েছিল। পরে সেখান থেকে আইডিয়া আসে এই ভর্তার। ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ভর্তা।
কোথায় পাবেন এবং কীভাবে যাবেন?
এই কলাভর্তা খেতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি জায়গা—টিএসসি, হাকিম চত্বর আর ডাকসুর সামনে ভ্যানে করে বিক্রি হয় এই ভর্তা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি নীলক্ষেত ও শাহবাগ দিয়ে যেতে পারবেন। ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে নীলক্ষেত বা শাহবাগ এসে রিকশা নিয়ে চলে আসুন টিএসসি বা কলাভবনের সামনে। নেমে আশপাশে তাকালেই দেখতে পারবেন ভ্যানগুলো।
কী কী ভর্তা এবং কত দাম?
কলাভর্তা ছাড়াও এখানে পাওয়া যায় জলপাই ভর্তা, বরই ভর্তা, পেয়ারা ভর্তা, পেয়ারা মাখানো, তেঁতুল মাখানো এবং সবকিছু মিলিয়ে একটা মিক্সড ভর্তা। দাম ২০ টাকা থেকে শুরু করে আপনি যত টাকা পর্যন্ত নিতে চান। আপনি চাইলে নিজে খেয়ে বাসার জন্যও নিয়ে যেতে পারবেন। খুব সুন্দর করে প্যাকেট করে দেয় ওরা।
যেহেতু এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, তাই যতটা সম্ভব হৈচৈ কম করুন। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে চারপাশ পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করুন।