আপনার জিজ্ঞাসা
মসজিদে দোয়ার সময় ঘুম আসে, কী করব?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। শরিফ বায়জীদ মাহমুদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫২৪তম পর্বে কি না, সে সম্পর্কে ধানমণ্ডি থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন হাসানুজ্জামান মিন্টু। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : নবীজি (সা.) যে ফজর নামাজের পর মসজিদে বসে দোয়া দরূদ পড়ে এশরাকের নামাজ পড়তেন, আমিও সেভাবে পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ঘুম অনেক বেশি, মসজিদে বসে দোয়া পড়তে গেলে আমার ঘুম চলে আসে। দীর্ঘদিন ধরে আমি একটি কাজ করে আসছি, এক শিক্ষক আমাকে বলেছেন, এতে কোনো অসুবিধা হবে না, সেটি হলো, আমি বাইরে থেকে হেঁটে মসজিদে বা বাসায় এসে এশরাকের নামাজ পড়ি। মাঝে মাঝে মসজিদের ভেতরেও হাঁটি। এতে কি কোনো অসুবিধা আছে?
উত্তর : আপনি খুব সুন্দর প্রশ্ন করেছেন। নবীর (সা.) হাদিয়া হচ্ছে, কেউ যদি ফজরের নামাজ আদায়ের পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত, যেখানে ফজরের নামাজ পড়েছেন সেখানে বসেই জিকির-আসকার করেন, তারপর সূর্যোদয় হলে এশরাকের দুই রাকাত নামাজ পড়েন, তাহলে তাঁর ব্যাপারে আল্লাহর নবি (সা.) এই ফজিলতের কথা বলেছেন। সেটি হলো— তিনি একটি পরিপূর্ণ উমরাহ বা একটি পরিপূর্ণ হজের যে ফজিলত রয়েছে, সেই ফজিলতটুকু লাভ করবেন।
আপনি সেই কাজটি করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঘুমের কারণে করতে পারছেন না, এই জন্য আপনি মাঝে মাঝে বাইরে থেকে হেঁটে আসেন বা মসজিদেও হাঁটেন। এরপর এই ফজিলতের জন্য মসজিদে এশরাকের নামাজ পড়েন। সেক্ষেত্রে আপনি এই ফজিলতটুকু পাবেন কি না, সেটাই আপনার প্রশ্ন। এই মর্মে এ যুগের একজন শ্রেষ্ঠ গবেষক বা ফাকিহ বলেছেন যে, না, এই ফজিলতটুকু তিনি পাবেন না। কারণ, আল্লাহর নবি (সা.) এই ফজিলতের জন্য কিছু শর্ত দিয়েছেন, শুধু সেগুলো পরিপূর্ণ করলেই আপনি এই ফজিলতটি পাবেন।
সুতরাং আপনি যদি হেঁটে আসেন অথবা যেভাবে নবি (সা.) বলেছেন, সেভাবে যদি সেই কাজটি সম্পন্ন না করেন, তাহলে এই ফজিলতটুকু আপনি পাবেন না।
তার মানে এই নয় যে, আপনি এই কাজটিই আর করবেন না। এই ফজিলত পাওয়ার জন্য আপনি যেভাবে করছেন সেভাবেই চেষ্টা করুন, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর বান্দাদের ফজিলত দিতেও পারেন। আল্লাহ তায়ালা অনেক উদার, মেহেরবান। আপনি এই কাজটি অব্যাহত রাখুন, চেষ্টা করুন সঙ্গে সঙ্গে নবীর (সা.) যে শর্তগুলো রয়েছে, সেগুলো পূরণ করার। তাহলে সরাসরি হাদিসের বক্তব্য অনুযায়ী যে ফজিলতের কথা এসেছে, সেই ফজিলত লাভ করার সুযোগ থাকবে।