নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫২৬তম পর্বে ১২ রবিউল আউয়াল রাসূলের (সা.) প্রকৃত জন্মতারিখ কি না, সে সম্পর্কে রাজবাড়ী থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন আনোয়ার। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : ১২ রবিউল আউয়াল কি রাসূলের (সা.) প্রকৃত জন্মতারিখ? যদি তা না হয়, তাহলে প্রকৃত জন্মতারিখ কত ও কোন সালে? ১২ রবিউল আউয়াল পালন করা কি জায়েজ? কারণ এটি তো রাসূলের (সা.) সঠিক মৃত্যু দিবস, শোকের দিন।

উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে রাসূলের (সা.) জন্ম হয়েছে কি না, এ নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে বিতর্ক বা মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ ৯ রবিউল আউয়াল বলে থাকেন। অধিকাংশ মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, ১২ রবিউল আউয়াল না, বরং রবিউল আউয়ালের ৯ অথবা ১০ তারিখ। রাসূলের (সা.) জন্মের তারিখ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ বক্তব্য হচ্ছে, ১২ রবিউল আউয়াল। এটি ঐতিহাসিকদের মতপার্থক্য, মতবিরোধ, এর চেয়ে বেশি কিছুই নয়।

দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এই দিনটিকে ঈদ হিসেবে পালন করার প্রশ্নই আসে না। যেহেতু রাসূল (সা.) এই দিনকে ঈদ হিসেবে আখ্যায়িত করেননি। ইসলামে যেটিকে ঈদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়নি, সেটাকে যদি কেউ ঈদ হিসেবে গ্রহণ করে থাকে, তাহলে তিনি মূলত ইসলামের মধ্যে নতুন জিনিস সংযোজন করলেন, যেটি হারাম এবং বেদাত, যেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর নবীর (সা.) মৃত্যু হয়েছে ১২ রবিউল আউয়াল এবং সেটি সোমবার ছিল।

তাই আমরা যদি ধরেও নিই, ১২ রবিউল আউয়াল নবীর (সা.) জন্ম এবং একই দিনে তাঁর মৃত্যু, তাহলে নবীর (সা.) জন্মের চেয়ে মৃত্যু মুসলিম উম্মাহর জন্য সবচেয়ে বড় মুসিবতের বিষয়। সুতরাং এটি ঈদ হবে না, বরং মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি হবে সবচেয়ে বড় শিক্ষনীয় দিবস, যেখান থেকে মুসলিম উম্মাহ শিক্ষা নেবে যে, নবীর (সা.) তিরোধানের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্ব কী কী জিনিস থেকে বঞ্চিত হলো, মাহরুম হলো। এটি উম্মে আইমান (রা.) স্পষ্ট করে আবু বকর (রা.) ও ওমরকে (রা.) বলেছেন। এটি সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।