নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।

জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫৪৪তম পর্বে জমি কিনলে সেই জমির ওপর জাকাত আসবে কি না, সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে রাজশাহী থেকে টেলিফোন করেছেন বাবুল হোসেন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : আমি একটি চাকরি করি, তা ছাড়া বিভিন্ন সময় হাতে কিছু টাকা-পয়সা আসলে জমি কিনে ফেলি। তখন নগদ টাকা এক বছর হাতে থাকে না। আমি জানতে চাই, এ ক্ষেত্রে আমাকে জাকাত দিতে হবে নাকি হবে না?

উত্তর : জাকাত ইসলামের পাঁচটি রুকুনের একটি। তাই এ বিষয়ে আপনাকে একটু গভীরভাবে পড়ালেখা করতেই হবে। জাকাতের মাসালা নিয়ে আলেমদের মাঝে খুব বেশি মতভেদও নেই। যেহেতু টাকা খরচ করে ফেললে সেটার ওপর জাকাত আসে না। কিন্ত যেহেতু টাকা দিয়ে জমি কিনছেন, তাই বলছি—জমি কেনার দুটি উদ্দেশ্য আছে। একটি হতে পারে জমিতে ফসল উৎপাদন বা চাষাবাদ করা। সেক্ষেত্রে ফসলের ওপর তো জাকাত আসবেই। আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে জমি কেনেন, যাতে পরবর্তী সময়ে বিক্রি করে ফেললে, তা থেকে আরো টাকা আসে। অর্থাৎ বিক্রির উদ্দেশ্যে বা টাকা পয়সা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে জমি কেনা।

তখন কিন্তু জমিটা ব্যবসায়িক সম্পদে পরিণত হবে। তখন আর এটা ফসলি জমি হিসেবে থাকবে না। তাই জমি কিনে টাকা খরচ করলেই যে আপনি জাকাত থেকে বেচে যাবেন, তা কিন্তু নয়। আপনি যদি নিয়ত করে থাকেন যে সেখানে বাড়ি করবেন, তাহলে সেই জমির ওপর কোনো জাকাত আসবে না।

আর যদি আপনি জমি কেনেন ফ্যাক্টরি করার উদ্দেশ্যে, তখন কিন্তু ওই জমির ওপর জাকাত আসবে। আবার অনেক সময় আপনি জমির ব্যবসাও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে যেদিন থেকে নিয়ত করবেন যে আপনি ওই জমি ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করবেন, সেদিন থেকে এক বছর পূর্ণ হলেই সেই জমির ওপর জাকাত আসবে।

এ ক্ষেত্রে জমি কেনার কারণেই আপনার ওপর জাকাত এসে যাবে। কেনার পর বছর শেষে আপনি চিন্তা করে, জমিটির বাজার মূল্য হিসাব করে নেসাবের টাকাসহ বাড়তি টাকার পুরোটা হিসাব করে জাকাত আদায় করবেন।