আপনার জিজ্ঞাসা
মুসলিম ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেয়ের বিয়ে কি শরীয়তভিত্তিক হবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ৫৮৮তম পর্বে মুসলিম ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেয়ের বিয়ে শরিয়াহভিত্তিক হবে কি না, সে বিষয়ে রাজশাহী থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন নজরুল। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া।
প্রশ্ন : একটি মুসলিম ছেলের যদি একটি হিন্দু মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়, সে ক্ষেত্রে বিয়েটা কি শরিয়াহভিত্তিক হবে? যদি বিয়ে হয়, তাহলে তার পরিবারের সঙ্গে সে কীভাবে চলবে? আর সামাজিকভাবে সে কতটুকু লাঞ্ছিত হবে?
উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, মুসলিম ছেলের জন্য কোনো হিন্দু নারী বা কোনো মুসরিক নারী বিয়ে করা জায়েজ নেই। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ এরশাদ করেছেন, তোমরা মুসরিক নারীদের কোনোভাবেই বিয়ে করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান আনবে। তারা যদি ঈমান আনে তবে তাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে, অন্যথায় ইসলামি শিরয়তের মধ্যে এ বিয়ে হারাম এবং এ বিয়ের কোনো ধরনের বৈধতা নেই, বাতিল বলে গণ্য হবে।
এরপর আল্লাহ আরেকটি নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা হলো দাসী যদি ঈমানদার হয় তাও তোমার জন্য ভালো, কোনো মুসরিক নারীকে বিয়ে করার চেয়ে, যদিও তাদেরকে তোমাদের খুব পছন্দ হয়। তাই কেহ যদি এ ধরনের বিয়ে করে থাকে তবে তার বিয়ে বাতিল হবে এবং না পারিবারিকভাবে, না সামাজিকভাবে তাকে এ বিয়ের জন্য অনুমোদন দেওয়া যাবে। বরং, বিয়েটা বাতিল হবার কারণে এটি ব্যবিচার ও অপকর্ম হবে।
আর যদি কোনোভাবে পারিবারিক বা সামাজিকভাবে এটাকে অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে যারা অনুমোদন দেবেন তারা সবাই এ কবীরা গুনাহর সঙ্গে যুক্ত হবেন।
পরিবারের উচিত হচ্ছে, তাকে সুন্দরভাবে বোঝানো এবং এ বিয়ে থেকে তাকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করা। সামাজিকভাবে ও আইনানুগ সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেবে। যদি বোঝানোর মাধ্যমে সম্ভব হয় তাহলে তা করবে, আর যদি তা না হয় তাহলে তাকে বাধ্য করবে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার জন্য। আর যদি কোনো ভাবেই সে এ কাজটি না করে থাকে তাহলে পরিবার থেকে তাকে আলাদা করে দিতে হবে।
কারণ হলো, ইসলাম যেটাকে অনুমোদন দেয় না, এ ধরনের কাজে যদি কেহ লিপ্ত হয়ে থাকে তার ঈমানের বিষয়টি সম্পর্কে আধিকাংশ আল তাহকীক- মাহকীক ওলামায়েকেরাম বলেছেন, এর মাধ্যমে সে মূলত কুফরির মধ্যে লিপ্ত হলো। প্রকাশ্য হারামকে হালাল করার জন্য সে কুফরির মধ্যে লিপ্ত হলো।