শরীরে কঠিন অসুখ বাসা বাঁধার করুণ গল্প শোনালেন আগুয়েরো
ইংলিশ লিগ মাতানোর পর স্প্যানিশ লিগে নিজেকে নতুনভাবে চেনানোর জন্য বার্সেলোনায় পাড়ি দেন সার্জিও আগুয়েরো। কিন্তু, কে জানতো নতুন ক্লাবে আগমনে মধুর সুরের বদলে বাজবে ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার বিদায়-ঘণ্টা। বার্সেলোনায় আগুয়েরোর অধ্যায়টি মোটেই সুখকর হলো না। ক্লাবটিতে নাম লেখানোর কিছুদিন বাদে তাঁর শরীরে দেখা দেয় কঠিন রোগ। যার কারণে শেষ পর্যন্ত ফুটবলকেই বিদায় বলে দিতে হলো আর্জেন্টাইন তারকাকে।
নিজের সেই কঠিনতম অধ্যায়ের করুণ গল্প শেয়ার করলেন আগুয়েরো। জানালেন, কীভাবে জটিল রোগ বাসা বাঁধে তাঁর শরীরে। মার্কার প্রতিবেদন অনুসারে, স্প্যানিশ টিভি অনুষ্ঠান ‘এল হরমিগেরো’তে নিজের ফেলে আসা দিন নিয়ে কথা বলেন আগুয়েরো।
আর্জেন্টাইন তারকার শরীরে বাসা বেঁধেছিল হৃদযন্ত্রের স্পন্দনে জটিলতা-সংক্রান্ত ‘অ্যারিথমিয়া’ রোগ। যার কারণে শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায় আগুয়েরোর।
রোগের প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়া নিয়ে আগুয়েরো বলেছেন, ‘প্রাক-মৌসুমেই কিছু লক্ষণসহ আমার খারাপ লাগতে শুরু করে। আমি ভাবলাম, অনুশীলনের সময়ে গরমের কারণে এ রকম হচ্ছে। এরপর আমি চোটে পড়ি এবং এক মাসের জন্য ছিটকে যাই। তবে, আমি তখনও অস্বস্তি বোধ করছিলাম। এরপর আমি দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করি এবং অনুশীলন সেশনে শ্বাসকষ্ট বোধ করি। একদিন আমি চিকিৎসককে বললাম, আমার খারাপ লাগছে। তারপর মাথা ঘোরা অনুভব করতে শুরু করি এবং অ্যারিথমিয়া শুরু হয়।’
রোগে আক্রান্ত হওয়া পরেও ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার কথা ভাবেননি আগুয়েরো, ‘ডাক্তার আমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু পরের সপ্তাহেই মাঠে আমার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে (আলাভেসের বিপক্ষে ব্যথা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন)। আমার খারাপ লাগতে শুরু করে। আমি খেলা বন্ধ করার জন্য রেফারিকে চিৎকার করে বলতে চাইলাম। কিন্তু, মুখ দিয়ে শব্দই বের করতে পারলাম না। তারপর আমার মাথা ঘোরা শুরু হলো, তাই আমি এক জন ডিফেন্ডারের হাত ধরে তাঁকে খেলা বন্ধ করার কথা বললাম। এরপর আমার খুব মাথা ঘুরছিল। শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারছিলাম না। অ্যারিথমিয়া শুরু হয়েছিল। খেলা বন্ধ হওয়ার পর তারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল।’
তখন হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীনই আগুয়েরো জানতে পারলেন, খেলতে নামলে আবারও কঠিন বিপদে পড়তে পারেন। আর্জেন্টাইন তারকা বলেন, ‘ওই সময় ডাক্তার বলেছিলেন, আমি খেলতে পারব। কিন্তু, সে ক্ষেত্রে এটা আবার ঘটতে পারে এবং আরও খারাপ কিছু হতে পারে। এরপর এ নিয়ে অনেক ভাবলাম। নিজেকে বললাম, তাহলে এখানেই শেষ। আমার বয়স এখন ৩৩। আমার একটি ছেলে আছে এবং আমার সামনে আরও জীবন পড়ে আছে।’
ক্যারিয়ার শেষ হলেও বার্সেলোনায় কিছু করতে না পারার আক্ষেপ হয়েছিল তাঁর, ‘একটা জিনিস আমি করতে পারিনি, তা হলো—বার্সেলোনার হয়ে খেলে কিছু দেওয়া। আমি ক্লাবের জন্য সবকিছু দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু খারাপ পরিস্থিতির জন্য হয়নি। তবে, ক্লাবটির হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আমার শেষ গোলটি করেই আমি আমার ক্যারিয়ার শেষ করেছি।’