বাংলাদেশের কেন এমন ভরাডুবি?
বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের ১৬৮ রানের লক্ষ্যটা খুব একটা বড় বলা যাবে না। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এটা নিতান্তই মামুলি ব্যাপার। যদিও ক্রিকেটের এই ছোট সংস্করণের র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তানই। তবে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় সাকিব আল হাসানের দলটাই এগিয়ে থাকবে। কিন্তু এই রান তাড়া করতে নেমেই আফগানদের কাছে নাকানি-চুবানি খেয়ে ৪৫ রানের বড় ব্যবধানে হেরে বসে সাকিবরা। ফর্মে থাকা টাইগার শিবিরের এমন ভরাডুবির কারণ কী?
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই দলের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ওপেনার তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের উইকেট হারিয়ে শুরুতেই যে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ, শেষ পর্যন্ত তা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আফগানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২২ রানেই গুটিয়ে যেতে হয় বাধ্য হয় তামিমরা। তামিম ও সাকিব বাংলাদেশ দলের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। টাইগার শিবিরের জয়ের বেশিরভাগ ম্যাচেই এ দুজনের কেউ না কেউ নিজেদের ব্যাটের ঝলক দেখান। অথচ গতকাল রাতে দুজনই নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হন। যদিও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক স্কোরকার্ডে ১৫ রান যোগ করেন, কিন্তু তামিম রানের খাতা খোলার আগেই মুজিব উর রহমানকে উইকেট উপহার দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। প্রথম ও তিন নম্বরে খেলতে নামা এ দুই ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতার দিন যদিও লিটন দাস কিছুটা লাগাম ধরে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন, তবে তাঁর চেষ্টা পরাজয় এড়াতে পারেনি।
দলের ব্যর্থতার দিনে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বরাবরই দলের হাল ধরেন। গতকাল ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বল হাতে দুই উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও তিনি ছিলেন সাবলীল। দলের সংকটময় মুহূর্তে ব্যাট হাতে ২৫ বল খরচায় স্কোরকার্ডে ২৯ রান জমা করেন। বল হাতে এক ওভার বল করেই আফগানদের নির্ভরশীল দুই ব্যাটসম্যান নাজিবুল্লাহ ও মোহাম্মদ নবিকে ফেরালেও এর পরে আর তাঁকে আক্রমণে আনেননি সাকিব। অন্যদিকে মোসাদ্দেক হোসেনও এক ওভার বল করে মাত্র তিন রান খরচ করেন। এই দুই সফল বোলারের ওপর পরে ভরসা না করা সাকিবের অধিনায়কত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এদের বাদ দিয়ে সাকিব যাদের ওপর ভরসা করেন, তাঁরা কেউই আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি।
শেষ চার ওভারে আফগানদের ব্যাট থেকে এসেছে ৭১ রান। আক্ষরিক অর্থে এই চার ওভারেই হেরে গেছে বাংলাদেশ। আবু জায়েদ চৌধুরী, নাজমুল হাসান, রুবেল হোসেন, আবুল হাসানরা ছিলেন বেশ খরুচে। ছয় ওভারে অধিনায়ক চারজন বোলারকে আক্রমণে নিয়ে এলেও তাঁরা কেউই আফগানদের রানের চাকার গতি শ্লথ করতে পারেননি। বোলার, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা, অধিনায়কোচিত সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের অভাবই মূলত বাংলাদেশের এমন পরাজয়ের অন্যতম কারণ।