তামিম-মুশফিক নেই বলেই কি এই হাল?
গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ২৫৬ রান তাড়া করতে গিয়ে আফগান বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। বাংলাদেশের অভিষিক্ত তরুণদের মধ্যে জ্বলে উঠতে পারেননি কেউ। তবে বাংলাদেশ দলে ছিলেন না পাঁজরে চোট নিয়ে খেলা মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের সঙ্গে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানকেও। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে পড়েন তামিম ইকবাল। তামিম ও মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের অনুপস্থিতির কারণেই বাংলাদেশ দলের করুণ পরিণতি হয়েছে কি না, এমন প্রশ্ন এসেছে ভক্তদের মনে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফর্মার তামিম ইকবাল। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই বাঁহাতি ওপেনারের গড় রান ৩৬.২৪। এশিয়া কাপের পূর্বে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। তবে ফিল্ডিং অনুশীলনের সময়ে চোট পাওয়ায় এশিয়া কাপে আবারও চোটের আশঙ্কায় ছিলেন তিনি। ঠিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচেই সরাঙ্গা লাকমালের একটি বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে তাঁর কব্জিতে চিড় ধরে। ফলে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। অন্যদিকে মুশফিক সেই ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন। ১৪৪ রানের সেই ইনিংস খেলার সময় মুশফিকের পাঁজরে ব্যথার কারণে শট নিতে সমস্যা হচ্ছিল। আজ শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ থাকায় গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামানো হয়নি তাঁকে। তাই দলে ছিলেন না এই দুই কাণ্ডারি।
অথচ ম্যাচের দৃশ্যপট শুরুতে ছিল বাংলাদেশের দিকেই। টসে হেরে বোলিং করতে নেমে আফগানিস্তানকে বেশ চাপেই রেখেছিল টাইগাররা। কিন্তু রশিদ খান ও গুলবাদিন নাইবের জুটি দলকে টেনে নিয়ে যায় ২৫৫ রানে। নিজের জন্মদিনে ৩২ বলে ৫৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তরুণ রশিদ খান। তাঁর অলরাউন্ডিং নৈপুণ্যে জয়ের আশা নিয়ে বোলিংয়ে নামে আফগানিস্তান। তবে এই চাপ সামলে উঠতে পারেননি অভিষিক্ত তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে বাংলাদেশের। মাঝে সাকিব আল হাসান এসে ম্যাচের হাল ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তিনিও আঙুলের চোটে নয় মাস ধরে ভুগছেন। তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো জয়ের আশাই ছিল না বাংলাদেশের।
অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র খেলোয়াড় ছাড়া বাংলাদেশ দলের অবস্থা কতটা শোচনীয়, সেটি আরেকবার প্রমাণিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলে তরুণরা নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি কোনো বিভাগেই। বলা চলে সাকিব আল হাসানের চার উইকেট সংগ্রহ ছিল বোলিংয়ে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। তামিম ও মুশফিক না থাকার কারণেই যদি আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের এমন শোচনীয় দশা হয়ে থাকে, তবে ভবিষ্যতে জয়ের জন্য আরো অনেক কিছু নিয়েই ভাবতে হবে নির্বাচকদের।