খেলতে খেলতে এমপি!
বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি জাতীয় দলের খেলোয়াড় থাকাকালেই রাজনীতিতে নাম লেখান এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২২ গজের মাঠে শ্রীলঙ্কার বহু ম্যাচের জয়ের নায়ক সনাথ জয়সুরিয়া। আর ২০১১ সালে জাতীয় দলের ক্রিকেট থেকে অবসরে যান তিনি।
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক প্রধান নির্বাচক অবশ্য বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দু-দুটি দুর্নীতির মামলা হয়েছে।
বাঁহাতি এই মারকুটে ওপেনারের জতীয় দলে অভিষেক হয় ১৯৮৯ সালে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কা দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন জয়সুরিয়া। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ছুঁয়েছেন অনেক মাইলফলক, হয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ক্রিকেটার। তবে শুধু ক্রিকেটেই সফল নন জয়সুরিয়া।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ রাজ্য মাতারা থেকে ২০১০ সালে রাজনৈতিক দল ‘ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালিয়েন্স পার্টি’ (ইউপিএফএ) থেকে মনোনয়ন পান এবং প্রায় ৭৪ হাজার ৩০০ ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। পরবর্তী পাঁচ বছরে রাজাপক্ষে সরকারের অধীনে তিনি দুবার দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। একটি ডাক বিভাগে; অপরটি স্থানীয় সরকার ও গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে।
তবে ২০১৫ সালের মেয়াদ শেষের পর অবশ্য আর নির্বাচনে অংশ নেননি ৪৮ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। ২০১১ সালে জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার আগে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই খেলেন জয়সুরিয়া।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলে প্রায় ২১ হাজার রানের মালিক তিনি। কিন্তু শুধু ব্যাটিংয়েই নয়, তিন ফরম্যাটে ৪৪০টি উইকেট নিয়ে নিজের বোলিং দক্ষতারও প্রমাণ দেন ‘মাতারা হারিকেন’।
সর্বশেষ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অভিভাবক সংস্থা আইসিসি ২০১৭ সালের জুলাইতে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ম্যাচে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জয়সুরিয়াকে চিঠি দেয়। সে সময় তিনি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। জয়সুরিয়া অবশ্য শুরু থেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন।
জয়সুরিয়া ছাড়াও ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজনীতির মাঠে নেমেছেন অনেকেই। সর্বোচ্চ সফলতার মুখও দেখেছেন কেউ কেউ—শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রানাতুঙ্গা, পাকিস্তানের ইমরান খান, ভারতের নভোজৎ সিং সিধু ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। ইমরান খান তো পাকিস্তানের মতো জটিল রাজনীতির দেশে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর রানাতুঙ্গা কয়েক দিন আগপর্যন্তও তাঁর দেশের তেলসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।