যে রেকর্ড গড়তে ১৪ বছর লেগেছে মেসির!
২০০৫ সালের ১ মে অ্যালবেসেতের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে নিজের প্রথম গোল করেন ১৮ বছরের এক কিশোর। প্রতিভাবান হিসেবে আগে থেকেই কিছুটা পরিচিতি ছিল তাঁর। তবে তখন পর্যন্ত স্পেন কিংবা জন্মস্থান আর্জেন্টিনা, কোথাও সেই অর্থে বড় তারকা ছিলেন না তিনি। ঠিক ১৪ বছর পর ১ মে ২০১৯, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সেলোনার হয়ে লিভারপুলের বিপক্ষে জোড়া গোল করলেন তিনি। মাঝখানে কাতালানদের হয়ে গোলের পর গোল করেছেন, সংখ্যার হিসেবে ৫৯৭টি। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার হয়ে ৬০০ গোল করার অনন্য রেকর্ড গড়া সেই খেলোয়াড়টি অন্য কেউ নন, আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি।
বার্সার হয়ে ৬০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে মেসিকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে তাঁর বিখ্যাত বাঁ পা। মোট ৪৯১টি গোল করেছেন এই বাঁ পা দিয়ে, যেখানে ডানপায়ের গোলসংখ্যা ৮৫টি। হেড করে গোল পেয়েছেন মাত্র ২২টি, আর অন্যান্য দুটি। তবে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে মেসির অর্জন কোন পর্যায়ে, সেটা কিছু পরিসংখ্যান দিলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
বার্সার হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে মোট ৬৮৩ ম্যাচে মাঠে নেমে ৬০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন মেসি। দলটির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার চেসার রদ্রিগেজ করেছেন ২৩২ গোল। যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে থাকা মেসি ম্যাচপ্রতি ০.৯ গোল করেছেন বার্সার হয়ে। শুধু বার্সেলোনার হয়ে নয়, লা লিগার ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসির স্প্যানিশ লিগে গোলসংখ্যা ৪১৭টি। লা লিগার এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৫০ গোল করার রেকর্ডটিও তাঁরই দখলে।
শুক্রবার রাতে লিভারপুলের বিপক্ষে করা গোলসহ চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসির গোলসংখ্যা এখন ১১২টি। তাঁর সামনে আছেন কেবল একজন, ১২৬ গোল করা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। একই দিনে চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয়টি আলাদা ইংলিশ ক্লাবের বিপক্ষে গোল করার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। কেবল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরই আছে এমন কীর্তি। তবে ইংলিশ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে রোনালদোর চেয়ে ১৪টি গোল বেশি করেছেন মেসি। ৬০০তম গোলের রেকর্ডের ম্যাচে আরেকটি কীর্তি গড়েছেন মেসি। এই নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে মোট ৩২টি দলের বিপক্ষে গোল করলেন তিনি। আলাদা ৩৩টি দলের বিপক্ষে গোল করে এগিয়ে আছেন কেবল রাউল গঞ্জালেজ।
ইতিমধ্যেই বার্সেলোনার হয়ে লা লিগার সম্ভাব্য সব রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন মেসি। বয়স হয়েছে ৩১, কোথায় গিয়ে থামবেন তা তিনি নিজেই জানেন। তবে এখনো যেই ফর্মে আছেন, তাতে আরো বহুদিন তাঁকে থামানোর চিন্তাভাবনা করতে গিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে।