আয়াক্সের স্বপ্নভঙ্গ, মোউরার হ্যাটট্রিকে ফাইনালে টটেনহাম
লুকাস মোউরার হ্যাটট্রিকে দ্বিতীয় লেগে ২-০-তে পিছিয়ে থাকার পরও ফাইনালে উঠে গেছে টটেনহাম। শেষ পর্যন্ত স্কোর গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩-২-এ। আমস্টারডামে আয়াক্সের মাটিতেই আয়াক্সকে ৩-২ গোলে হারাল টটেনহাম।
অর্থাৎ আগামী ১ জুন মাদ্রিদে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে টটেনহাম।
অথচ শুরুটা মোটেও ভালো যায়নি ইংলিশ ক্লাবটির। একে তো প্রথম লেগে আয়াক্সের কাছে এক গোলের পরাজয়, এরপর দ্বিতীয় লেগের শুরুর দিকেও দুই গোলে পিছিয়ে থাকা। জিততে হলে যেন মোউরার হ্যাটট্রিকটাই প্রয়োজন ছিল। আর সেই প্রয়োজন মেটাতেই যেন হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে ডেলে আলির কথা বলতেই হয়। মোউরার তিন গোলের দুটিতেই তাঁর অবদান।
চ্যাম্পিয়নস লিগের শুরু থেকেই সবার নজর কেড়েছিল আয়াক্স। একের পর এক ঝলক দেখিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করেছিল দলটি। এমনকি ম্যাচের শুরুর দিকেও ফাইনালের বার্তাই নিয়ে এসেছিল তারা। আর সেটি জানান দিতে খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটেই ফাইনালের পথ শক্ত করে আয়াক্স। গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ডি লিট। এর ঠিক আগেই টিডিটের একটি শট জালে জড়াতে দেননি টটেনহাম গোলরক্ষক লরিস। কর্নারের বিনিময়ে আতঙ্ক কমালেও ওই কর্নার থেকেই হেড করে গোল করেন ডি লিট।
আর এতেই ক্ষান্ত হয়নি দলটি। ৩৫ মিনিটে হাকিম জিয়েচের দুর্দান্ত শটে আবারও এগিয়ে যায় আয়াক্স।
আয়াক্স এগিয়ে থাকলেও খেলা চলছিল সমানে সমান। একদিকে স্বাগতিক এই দলটি আক্রমণ চালায়, তো অন্যদিকে টটেনহাম। দুই শূন্য গোলে পিছিয়ে পড়লেও যেন ফাইনালের নেশা পেয়ে বসেছিল টটেনহামের। আর সে জন্যই দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে জেতার আশা টিকিয়ে রাখে দলটি। ডেলে আলির বাড়িয়ে দেওয়া পাসে গোল করেন লুকাস মোউরা। সময় কম, দলকে জেতাতে হলে দরকার আরো গোল। প্রথম গোলের উদযাপন করতে না করতেই চার মিনিটের মাথায়, অর্থাৎ ৫৯ মিনিটে আবারও টটেনহামের ত্রাণকর্তা হয়ে পড়েন সেই লুকাস। দুর্দান্ত শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলের জন্যও ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখেন তিনি।
এরপর শুরু হয় সময় গণনা। কে যাবে ফাইনালে? কোনো সময় আক্রমণভাগে আয়াক্সের আধিপত্য দেখা গেলেও মুহূর্তেই আক্রমণে চলে যায় টটেনহাম। যেন কিছুতেই বোঝা যাচ্ছিল না, কোন দলের ভাগ্যে আছে ফাইনাল। কিন্তু ভাগ্যের খেলাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ম্যাচের একদম শেষপর্যায়ে আবারও সেই মোউরা-ঝলক। ৯০ মিনিটে আবারও গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক তো পূরণ করেনই, সেইসঙ্গে পুরো দলকে নিয়ে যান স্বর্গরাজ্যে। আর তার আগে আবারও সেই ডেলে আলি। তাঁর পাস থেকেই তো গোল করেন মোউরা। এবার আর ঠেকায় কে? কয় মিনিটই বা বাকি আছে? নিজেদের সেরাটা দিয়েও অ্যাওয়ে গোলে পিছিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের আসর থেকে বিদায় নেয় আয়াক্স। আর লিভারপুলের সঙ্গে ফাইনালে চলে যায় টটেনহাম। ইংলিশ বনাম ইংলিশ। যেই জিতুক, কাপ যাবে ইংল্যান্ডের মাটিতেই। এখন শুধু দেখার পালা চ্যাম্পিয়নস লিগের কাপ কার ঘরে যায়?