বিশ্বকাপ মাতাতে পারবেন কি মুস্তাফিজ?
তাঁর কাটার আগের মতো খুব একটা দুর্বোধ্য নয়। কমে গেছে তাঁর বলের ধার। ডেলিভারিগুলো হয়ে গেছে নির্বিষ। বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে কদিন আগেও এমন আলোচনা হচ্ছিল। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে সেই সমালোচনার জবাবটা ভালোভাবেই দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি পেসার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত বল করে চার উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের আগে নিজের আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়েছেন।
তাই আসন্ন বিশ্বকাপে মুস্তাফিজের ভালো কিছু করার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকেই মত দিয়েছেন, আয়ারল্যান্ড সফরের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপেও এই বাংলাদেশি পেসার ভালো করতে পারেন। এরই মধ্যে সে প্রমাণও দিয়েছেন তিনি।
গত ১৩ মে ডাবলিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে মুস্তাফিজ ৯ ওভার বল করে ৪৩ রান দিয়ে চার উইকেট পান। দীর্ঘদিন পর বল হাতে উজ্জ্বলতা ছড়ান কাটার-মাস্টার। গত বছর সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবিতে সর্বশেষ চার উইকেট পেয়েছিলেন বাংলাদেশি এ পেসার। এরপর দীর্ঘ সময় ভালো কোনো সাফল্য পাচ্ছিলেন না তিনি।
মাঝখানে মুস্তাফিজের পারফরম্যান্সে ব্যাপক ছন্দপতন হয়। ২০১৫ সালে ওয়ানডে অভিষেকে দারুণ চমক দেখিয়েছিলেন তিনি। এক সিরিজে ১৩ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম বছরে ৯ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৩০ রান তোলে। এই ম্যাচেও মুস্তাফিজ দুই উইকেট নেন। কিন্তু রান দেন ১০ ওভারে ৯৩, প্রতি ওভারে ৯.৩ রান করে।
একই সিরিজে মুস্তাফিজ প্রথম দুই ম্যাচে বেশ কম রান দেন, এক ম্যাচে ৯ ওভারে ৪২ এবং আরেক ম্যাচে আট ওভারে ৩৬ রান। তবে এর ঠিক আগে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে দুটি ওয়ানডে সিরিজে পাঁচটি ম্যাচ খেলেন মুস্তাফিজ। যেখানে পাঁচ ম্যাচে সাত উইকেট নেন তিনি। মোট ৪৮ ওভার বল করে ১৯৫ রান দেন, ৪.০৬ গড়ে।
সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই উপমহাদেশে মুস্তাফিজ যেমন পারফর্ম করছেন, এর বাইরে গিয়ে ঠিক তেমনটা পারছেন না তিনি। এই অঞ্চলে ২৭ ওয়ানডেতে ২১২.৫ ওভার বল করে ৯৭৮ রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ। উইকেট পেয়েছেন ৫৬টি।
এশিয়ার বাইরে গিয়ে ঠিক তেমন পারফর্ম করতে পারছেন না মুস্তাফিজ। ১৬ ওয়ানডেতে ১২৯.৫ ওভার বল করে ৭৭৬ রান দিয়েছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন ২৩টি। এতেই বোঝা যায় তাঁর পারফরম্যান্সে কতটা পার্থক্য ছিল।
আয়ারল্যান্ড সফরে আবার ফর্মে ফিরেছেন মুস্তাফিজ। এবার বিশ্বকাপ মাতাতে পারবেন কি তিনি?