লক্ষ্যটা বড়, কিন্তু অসম্ভব না
টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে পারেন আনেকেই। প্রথমে ব্যাট করে ক্যারিবীয়রা বড় লক্ষ্য গড়েছে। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দিয়েছে ৩২২ রান।
আপতত দৃষ্টিতে বড় লক্ষ্যই মনে হতে পারে। কিন্তু তা অসম্ভব
নয়। কারণ বাংলাদেশ দলে আছেন তরুণ এবং অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে নির্ভরযোগ্য কিছু ব্যাটসম্যান, যারা পারেন দলের প্রয়োজনে দৃঢ়তা দেখাতে।
অবশ্য এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা তিন ম্যাচে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই আসরের লিগ পর্বে দুবার এবং ফাইনালে বিধ্বস্ত করেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই সুখস্মৃতিতে উজ্জীবিত হয়ে জয়ের ধারায় ফিরতে পারে বাংলাদেশ।
ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম ম্যাচ থেকেই দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আট উইকেটে হারিয়ে আসর শুরু করে টাইগাররা। এরপর লিগের দ্বিতীয় পর্বে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশ। পাঁচ উইকেটের জয়ে ফাইনালের টিকিট পায় টাইগাররা। লিগ পর্বে দুইবার হারানোর পর ফাইনালেও সাফল্য পায় তারা। সে শিরোপা এখন বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় প্রেরণা।
তবে এদিন লক্ষ্য বড় হলে টনটনের মাঠ ছোট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যোনরা যেভাবে চড়াও হয়ে খেলেছেন, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্যও তা অসম্ভব না।
টনটনের এই ছোট মাঠে আট উইকেটে ৩২১ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকিয়ে রাখতে ম্যাচটা জিততে হবে মাশরাফিদের। আর তার জন্য চাই ৩২২ রান।
বিশ্বকাপে গত আসরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩১৮ রান করে স্কটল্যান্ড। ওই ম্যাচে ছয় উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। চার উইকেটে ৩২২ করেন তামিমরা। জিততে হলে ওই রেকর্ড ভাঙতে হবে মাশরাফিদের।
শেই হোপ, লুইস আর হেটমেয়ার যেভাবে ব্যাট করছিলেন মনে হচ্ছিল ৩৫০ পার হয়ে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান। সেটা হলো না সাকিব, মুস্তাফিজ আর সাইফুদ্দিনের কারণে। নিয়মিত উইকেট নিয়ে ওই তিনজনই রানের লাগামটা টেনে ধরেন। মুস্তাফিজ আর সাইফুদ্দিন পেয়েছেন তিনটি করে উইকেট। সাকিব পেয়েছেন দুই উইকেট।
বাংলাদেশ সব সময় প্রিয় প্রতিপক্ষ শেই হোপের। আজও বাংলাদেশের বিপক্ষে হেসেছে হোপের ব্যাট। তবে শতক পুরো করতে পারেননি। ১২১ বলে ৯৬ করে আউট হন তিনি। হোপকে ফেরান মুস্তাফিজ। শেই হোপের সঙ্গে জুটি গড়লেন হেটমেয়ার। আর ঝড় তুললেন একটা। ২৬ বলে করে ফেললেন ৫০। ৪০তম ওভারে মুস্তাফিজ ফেরালেন হেটমেয়ারকে। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হেটমেয়ার আউট হওয়ার পর নামলেন আন্দ্রে রাসেল। মুস্তাফিজের বলটা রাসেলের ব্যাট ছুঁয়ে মুশফিকের হাতে! তিন উইকেটে ২৪২ রান থেকে তা হয়ে গেল পাঁচ উইকেটে ২৪৩!
প্রথম ওভারটা মাশরাফি করলেন। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল বলই ধরলেন না। এক রানও দিলেন না অধিনায়ক। গেইলকে শুরু থেকেই মনে হচ্ছিল অপ্রস্তুত। আর সেই সুযোগটাই নিলেন সাইফউদ্দিন। নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটা গেইলের ব্যাট ছুঁয়ে গেল মুশফিকের গ্লাভসে।
শূন্য রানে বিদায় নেন গেইল। খেলেছেন ১৩ বল। টনটনে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন মাশরাফি। একটু দেরি করেই বোলিংয়ে এসেছেন সাকিব আল হাসান। এসেই ভেঙেছেন লুইস আর হোপের জুটি। লুইসকে ৭০ রানে ফেরান তিনি। পরে পোরানকেও আউট করেন তিনি। ৩০ বলে ২৫ রানে আউট হন তিনি।
মাশরাফি আট ওভারে ৩৭ রান দিয়েছেন; তবে কোনো উইকেট পাননি। সাইফুদ্দিন ১০ ওভারে ৭২ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। মুস্তাফিজ নয় ওভারে ৫৯ দিয়ে তিন উইকেট নেন। সাকিব আট ওভারে ৫৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন।