বাংলাদেশের যে ‘তারকা’ আলোচনায়!
রস টেলর ওভালে বলেছিলেন, ‘মনে হচ্ছিল ঢাকা বা চট্টগ্রামে আছি।’ বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচের পর ক্রিকেট সাময়িকী ‘দ্য ক্রিকেটার’ লিখেছে, ‘একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল এটা নটিংহাম নয়, এটা চিটাগং!’
বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করেন ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে। তাঁর মতে, বাংলাদেশ দলে অভিজ্ঞ ও মেধাবী ক্রিকেটারের অভাব নেই।
তিনি বলেন, ‘এরা অনেক দূর পর্যন্ত যাবে। ক্রমেই দুর্দান্ত দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে দলটির আরেকটা শক্তি আছে, যা দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে কাজ করবে। তা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফ্যান!’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফ্যানরাই চলতি বিশ্বকাপের আলোচনার অন্যতম প্রসঙ্গ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ট্রেন্ট ব্রিজ হোক, টনটন হোক আর ওভাল কিংবা কার্ডিফ—বাংলাদেশের দর্শক খেলা দেখতে যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকছে লাল-সবুজের আবহ। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন মাশরাফি-সাকিবদের। আর বাংলাদেশের ফ্যানরাই হয়ে উঠছেন বিশ্বকাপের তারকা।
ওভালে ২৪৫ রানের টার্গেট দিয়েও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন মোসাদ্দেক-মিরাজ-সাইফউদ্দিন। জয় পেতে রীতিমতো কাহিল হয়েছে কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের উইকেট পড়েছে আর উল্লাসে ফেটে পড়েছে স্টেডিয়াম। রস টেলর তো ম্যাচ শেষে বলেই ফেললেন, ‘মনে হচ্ছিল ঢাকা বা চট্টগ্রামে আছি।’
টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও দুর্দান্ত সমর্থন পেয়েছে বাংলাদেশ। হতাশ করেননি সাকিব-লিটনরা। তাঁরাও উপহার দিয়েছেন মনে রাখার মতো ম্যাচ।
ট্রেন্ট ব্রিজে লাল-সবুজ রাঙানো দারুণ সমর্থন পেয়েছে বাংলাদেশ। বিখ্যাত ক্রিকেট সাময়িকী ‘দ্য ক্রিকেটার’ লিখেছে, ‘অস্ট্রেলিয়া পাহাড়সমান রান করেছে। তাতে কী? দমে যায়নি বাংলাদেশের দর্শকরা। দিনভর চিৎকার করে মাশরাফিদের সমর্থন জানিয়েছে, গান গেয়েছে। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল এটা যেন নটিংহাম নয়, এটা চিটাগং!’
ভক্তদের নিরাশ করেননি মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ। ৩৮২ রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৩৩ রানে থেমেছে বাংলাদেশ! এখন তো এমন বলা হচ্ছে দুই ভায়রা ভাই টিকে গেলে হয়তো...!
বাংলাদেশের ক্রিকেট আর ফ্যানদের এই পাগলামি দেখে একটি বিষয় তুলে ধরেছে ‘দ্য ক্রিকেটার’। সাময়িকীটির মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে হবে ‘বিগ থ্রি’র। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত একে অন্যের সঙ্গে কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেললেও বাংলাদেশের সঙ্গে খেলে না। এই ধারণা বদলানোর সময় এসেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ও তাদের সমর্থকরা এ ধারণা বদলে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি সম্প্রচার সম্পর্কিত ব্যবসার কথা বলা হয়, তাহলেও বাংলাদেশকে নিয়ে সিরিজ করাটা লাভজনক হবে।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের ব্যাপক সমালোচনা করা হয় ওই প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, ২০২৩ পর্যন্ত করা ইংল্যান্ডের ক্যালেন্ডারে হোম সিরিজে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটা অবিবেচকের মতো কাজ। এটা নতুন করে করা এখন সময়ের দাবি।