নিউজিল্যান্ডের কপালও বটে!
একেই বলে কপাল! ‘সেমিফাইনাল দল’ হিসেবে তকমা পাওয়া নিউজিল্যান্ডই দ্বিতীয়বারের মতো উঠে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে। তবে যেই ধারায় এগুচ্ছে কিউইরা তাতে শুধু সেমিফাইনাল দল নয় বিশ্বকাপ জয়ী দল হিসেবেই নতুন ইতিহাস গড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অবশ্য পেছনে তাকালে দেখা যাবে পারফরম্যান্সের সঙ্গে কিউইদের ভাগ্যদেবতার বড় হাত ছিল। টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের দুই ম্যাচ ছাড়া প্রতিটি ম্যাচেই হারতে হারতে জিতেছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
আসরে নিজেদের শুরুর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দুর্দান্ত সূচনা করে নিউজিল্যান্ড। মূলত সেই ম্যাচের জয়ের ব্যবধানই তাদের নিয়ে এসেছে সেমিফাইনালে। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৬ ওভারে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় তারা। তাতে বিশাল রান রেটে এগিয়ে থাকে নিউজিল্যান্ড। এরপরের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে ঘাম ছুটে যায় বোল্ট-হেনরিদের। তৃতীয় ম্যাচে দুর্বল আফগানদের বিপক্ষে বড় ব্যবধানের জয় নিয়ে আবারো বিশাল রান রেট। সেই রান রেটের সুবাদেই সমান ১১ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তানকে টপকে সেমির টিকেট পায় নিউজিল্যান্ড।
অথচ আফগানদের বিপক্ষেই ছিল শেষ সহজ জয়। চতুর্থ ম্যাচে বৃষ্টি বাঁধায় ভারতের বিপক্ষে এক পয়েন্ট। পরের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও শেষ ওভারে জয়। একই ঘটনা ওয়েস্ট ইন্ডজের বিপক্ষেও। ৪৯তম ওভারেই কার্লোস ব্রাথওয়েটকে ফিরিয়ে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয় তুলে নেয় কিউইরা। পাঁচ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট আর পরিত্যাক্ত ম্যাচের ১ পয়েন্ট। মোট ১১ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে হারের স্বাদ পায় গেলবারের ফাইনালিস্টরা। এরপর আর জয়ের দেখা পায়নি। একে একে হারে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের কাছে।
কে ভেবেছিল টানা তিন ম্যাচে হারার পর সেমিফাইনালে ভারতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে ঠেকাবে নিউজিল্যান্ড? সবার ভাবনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে শেষ পর্যন্ত প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে নাম লেখায় নিউজিল্যান্ডই।
এখানেও কিউইদের সঙ্গী প্রকৃতি। বৃষ্টির কারণেই স্লো গতিতে রান তোলার পরও জয়টা তাদের। আগের দিনের বৃষ্টিতে ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডেতে। বৈরি আবহাওয়া কাজে লাগিয়ে আগুন ঝরায় কিউই পেস।
মাত্র ২৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ভারতের পক্ষেই বাজি ছিল সবার। কিন্তু বল হাতে ভারতীয় শিবিরকে কাঁপিয়ে দিলেন ট্রেন্ট বোল্ট-ম্যাট হেনরিরা। ৫ রানে ৩ আর ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর আসলে ম্যাচ থেকে ছিটকেই পড়ে ভারত। মাঝে ভারতকে টেনে তোলেন ধোনি-জাদেজা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিউই পেসের কাছেই হার মানতে হলো। বিদায় নিতে হলো ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে।
এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও বৃষ্টিবাধায় পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটি নেমে এসেছিল ৪৩ ওভারে। যে ম্যাচে ৪৩ ওভারে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ তাড়া করে ফেলে কিউইরা, ডাকওয়ার্থ লুইসে জিতে যায় ৪ উইকেট আর ১ বল হাতে রেখে। এবারও সেই বৃষ্টিই সহায় হলো তাদের। সত্যিই নিউজিল্যান্ডের কপালের জোর আছে!